সেতুর বদলে যেন পুলসিরাত

সেতুর বদলে যেন পুলসিরাত ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১১:১২, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার গোলবুনিয়া ও জানখালী গ্রামের মাঝামাঝি সাংরাইল খালের ওপর নির্মিত সংযোগ সেতুটি এখন চরম বেহাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

প্রায় ৩১ বছর আগে নির্মিত এই লোহার সেতুর পাটাতন স্ল্যাবগুলো ১৪ বছর আগে পুরোপুরি ভেঙে যায়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে লোহার বিমের ওপর সুপারিগাছ ও বাঁশ ব্যবহার করে একটি অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করেন। এভাবেই প্রতিদিন ৬ গ্রামের অন্তত ৮-১০ হাজার মানুষ জীবন ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার করছেন। পাশের স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও একই ঝুঁকির ওপর নির্ভর করে যাতায়াত করছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মঠবাড়িয়া প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্র জানায়, সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল তিন দশকেরও বেশি সময় আগে। ২০০৭ সালের সিডর ‍ঘূর্ণিঝড়ে গাছ পড়ে সেতুর পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ল্যাবগুলো একে একে ভেঙে যায়। স্ল্যাব সবগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন সুপারিগাছ দিয়ে পাটাতন তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করেন, কিন্তু জরুরি মেরামত বা পুনর্নির্মাণ হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর লোহার বিমগুলো মরিচায় ক্ষয়ে গেছে। পাটাতন নেই, শুধু লোহার খুঁটি ও বিমের ওপর অস্থায়ী সরু সাঁকো। তবু প্রতিদিন স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিক, জানখালী উলুবাড়িয়া হামিদিয়া দাখিল মাদরাসা, জানখালী সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ বাধ্য হয়েই এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান মীর জানান, সিডরের পর থেকেই সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী। বহুবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেতু পুনর্নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজেদের উদ্যোগে সুপারিগাছ ও বাঁশ দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করেছেন তারা।

কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিশু শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই সাঁকো পার হতে গিয়ে ভয়ে থাকে এবং দুর্ঘটনাও ঘটে। এর আগে একজন শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে যায়; এক বয়স্ক নারীও আহত হন। কৃষকেরা তাদের পণ্য মাথায়–ঘাড়ে করে ঝুঁকি নিয়ে বাজারে যেতে বাধ্য হন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, সেতুটি প্রথমে উপজেলা পরিষদ নির্মাণ করে। এলজিইডি জরাজীর্ণ সেতুর যে তালিকা চেয়েছে, সেখানে এই সেতুটিকেও অন্তর্ভুক্ত করে পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুমোদন পেলে আরসিসি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ জানতে পেরে প্রকৌশল বিভাগকে পাঠানো হয়। তারা পরিদর্শন করে দেখে সেতুটি চলাচলযোগ্য নয়। ডিপিপির তালিকা অনুমোদন হলে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

 

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement