২৬ টুকরো মরদেহ, জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য

২৬ টুকরো মরদেহ, জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:৫৫, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণের জাতীয় ঈদগাহের পাশে একটি ড্রামের ভেতর থেকে যে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম আশরাফুল হক, বয়স ৪২ বছর। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরের গোপালপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল মূলত হিলি থেকে পণ্য সংগ্রহ করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাইকোর্ট এলাকার রাস্তার পাশে রাখা নীল রঙয়ের দুটি ড্রামের ভেতরে চাল ও কালো পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় তার দেহ ২৬ টুকরা করে রাখা ছিল। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে। তাকে কারা, কীভাবে হত্যা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে পুলিশের ধারণা কয়েকদিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, তিন দিন আগে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে আশরাফুল তার প্রবাসী বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে ফোন করলে বেশিরভাগ সময়ই জরেজ রিসিভ করতেন এবং আশরাফুল নানান কাজে ব্যস্ত আছেন বলে জানাতেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বামীর খোঁজ পেতে আশরাফুলের স্ত্রী লাকী বেগম ভাইকে নিয়ে বদরগঞ্জ থানায় গেলে সেখানে তারা জানতে পারেন যে ঢাকায় খণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেছে—যা তাদের স্বজন আশরাফুলেরই। খবর শোনার পর তিনি ভেঙে পড়েন।

ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম জানান, দুপুর ২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে দুই ব্যক্তি একটি ভ্যানে করে রাস্তার পাশে ড্রামগুলো ফেলে যায়—এ তথ্য স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে। পরে দুর্গন্ধ ছড়ালে পুলিশ এসে ড্রাম খুলে মরদেহ উদ্ধার করে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

নিহতের শ্যালক আব্দুল মজিদ জানান, তিন দিন আগে মালয়েশিয়া ফেরত বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় যান আশরাফুল। বুধবার বিকালে স্ত্রী লাকীর সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। আশরাফুলের ফোনে কল দিলে জরেজ ফোন ধরতেন, কিন্তু আশরাফুলকে দিতেন না। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, নাকি আশরাফুলের ফোন নাকি ড্রেন থেকে কুড়িয়ে পেয়েছেন। এসব সন্দেহজনক আচরণের পর পরিবারের সদস্যরা থানায় আসেন এবং সেখানেই খুনের খবর পান।

বদরগঞ্জ থানার ওসি একেএম আতিকুর রহমান জানান, নিহতের স্ত্রী ও স্বজনেরা থানায় এসে তথ্য প্রদান করেছেন, যা রমনা থানায় পাঠিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এদিকে আশরাফুলের পরিবার বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার সকালে মামলা নেওয়া হয়, যেখানে জরেজ ছাড়াও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মরদেহ নিতে পরিবারের সদস্যরা আসেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement