রংপুরে নারী শ্রমিকরা পুরুষের চেয়ে মজুরি পায় অর্ধেক

রংপুরে নারী শ্রমিকরা পুরুষের চেয়ে মজুরি পায় অর্ধেক ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক আজ

Published : ১৮:৪২, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে চলছে আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুম। প্রিয় সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা দু’মোটো ভাত তুলে দিতে পুরুষের সাথে নারীরাও মাঠে কাজ করছেন।

অধিকাংশ পুরুষ শ্রমিক বাড়ির বাইরে থাকায় রংপুর অঞ্চলে কৃষি সেক্টর এখন নারীদের হাতের মুঠোয়। কৃষিতে নারীগণ সমঅবদান রাখলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নারীদের সমমজুরি নিশ্চিত হয়নি।

আমন ধান কাটা মৌসুমে নারী শ্রমিকরা দিন হাজিরা কাজ করে পাচ্ছে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা। অপরদিকে পুরুষ শ্রমিক পাচ্ছে ৭শত থেকে ৮শত টাকা। এ অঞ্চলের অধিকাংশ পুরুষ শ্রমিক রংপুর বিভাগের বাহিরে কাজ করার জন্য যায়। তারা জীবিকার তাগিদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন।

পুরুষ শ্রমিকরা বাড়ির বাইরে অবস্থান করায় রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও , পঞ্চগড় ও  দিনাজপুর জেলায় প্রতি বছরই নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে।

বাড়ীর কাজের পাশাপাশি নারীরা এখন ক্ষেতে কাজ করছে। নারী শ্রমিকগণ ক্ষেতে বীজতলা লাগানো, ক্ষেত পরিচর্যা, জমির আগাছা নিড়ানি, ফসল ঘরে তোলাসহ সব ধরনের কাজে এখন মূখ্য ভূমিকা পালন করছে। কৃষি সেক্টরের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

কিন্তু মজুরির ক্ষেত্রে পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে নারী শ্রমিকগণ অনেক কম পাচ্ছে। রংপুর অঞ্চলের সড়ক, মহাসড়কের পাশে দাঁড়ালেই দেখা যাবে শত শত নারী শ্রমিক ক্ষেতে কাজ করছে। জানা যায়, রংপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রায় ৫৫ হাজার পরিবারের বাস। এক সময়ের অবস্থাসম্পন্ন এসব পরিবার নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে কোনোমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে।

শ্রম বিক্রিই তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। একই অবস্থা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার চরাঞ্চলের নদী ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোর। এছাড়াও গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলার আদিবাসি (উপজাতি) পরিবারের নারীরা শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।

এমন কি রংপুর সিটি কর্পোরেশনেও দেখা যায় নারীরা দল বেঁধে জমি থেকে ধান কেটে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। মহানগরীর নারী শ্রমিক বালা রাণী বলেন, হাড়ভাঙ্গ পরিশ্রম করেও পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছি না। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়েও বেশি কাজ করতে হয়।

 রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই নারী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট পুরুষ শ্রমিকের ২০ শতাংশ নারী শ্রমিক রংপুর অঞ্চলে কাজ করছে। তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। 

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement