বাবরি ইস্যুতে হুমায়ুনকে হত্যার হুমকি
Published : ২২:২৭, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আবার নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে কেন্দ্র করে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রেজিনগরের মরাদিঘির মাঠে তার বড় জনসভা হওয়ার আগে থেকেই রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহ সরাসরি হুমায়ুনকে আক্রমণ করে বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
অর্জুন সিংহের বক্তব্য অনুযায়ী, হুমায়ুন কবীর যদি ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ করতে যান, তাহলে তাকে নাকি পাঠিয়ে দেওয়া হবে বাবরের কাছে। তিনি বলেন, এখানে কোনো শিলান্যাসের প্রশ্নই আসে না—সবই নাকি নাটক। তার দাবি, ভারত হিন্দুদের দেশ, এখানে মসজিদ বানানো যেতে পারে, তবে ‘বাবরি’ নাম ব্যবহার করলে তা নাকি সংবিধানের প্রতি অসম্মান হবে।
অন্যদিকে হুমায়ুন কবীর আগেই ঘোষণা করেছিলেন, প্রস্তাবিত ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস তার সভামঞ্চ থেকেই হবে। ইতোমধ্যে মরাদিঘির মাঠে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে—মঞ্চ নির্মাণ থেকে শুরু করে এলাকা জুড়ে টাঙানো হয়েছে ‘প্রস্তাবিত মসজিদের’ পোস্টারও। নিরাপত্তা পরিস্থিতি কঠোর করতে BSF রুট মার্চ শুরু করেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদে এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম উল্লেখ না করেই হুমায়ুনকে বারবার কটাক্ষ করেন। কখনো তাকে ‘মীরজাফর’ ইঙ্গিত দেন, আবার কখনো ‘পোকামাকড়’ বলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য নিক্ষেপ করেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়।
এ পরিস্থিতির মাঝেই আবারও কড়া ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ভরতপুরে তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবেন এবং আগের আসন থেকেই লড়বেন। তার ভাষায়, সময়ই সবকিছু পরিষ্কার করবে। কংগ্রেস, সিপিএম, আইএসএফ—সবাইকে তিনি এক মঞ্চে আনার উদ্যোগ নিতে চান। তার দাবি, লড়াই হোক খোলাখুলি, মুর্শিদাবাদের মানুষ দেখিয়ে দিক, কাকে তারা সমর্থন করেন।
হুমায়ুন আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে যে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে, তা শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের জন্যই বিপদ ডেকে আনবে। তার নিজের ক্ষতি হবে না, বরং যারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন, তাদেরই ভাবা উচিত এর পরিণতি কী হতে পারে।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন সামনে থাকা অবস্থায় তৃণমূলের ভেতরে এই ধরনের বিদ্রোহ দলটিকে অস্বস্তিতে ফেলছে। এর আগেও হুমায়ুন কবীর একাধিকবার দলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে শোকজ নোটিশ পেয়েছিলেন। এবার সাসপেন্ড হওয়ার পর তার অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে।
নানা মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্য এবং উত্তপ্ত বিবৃতির ফলে শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনেই তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ‘বাবরি মসজিদ’ ইস্যুকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
বিডি/এএন


































