জুলাই সনদের কিছু প্রস্তাবনা নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (ছাত্রদল) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
রোববার (২ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাছির উদ্দীন নাছির লিখেছেন, জুলাই সনদে বিএনপির দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। তারা দাবি করছেন, বিএনপি নাকি ক্ষমতার ভারসাম্য চায় না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, সনদের কিছু প্রস্তাবনাই এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে সেগুলো কার্যকর হলে নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে এবং ভারসাম্য নষ্ট হবে।
তার ব্যাখ্যায় তিনি উল্লেখ করেন, প্রস্তাবিত জুলাই সনদ অনুযায়ী সরকারি নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিরোধীদলীয় সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবেন। যেমন—পিএসসিতে নিয়োগ কমিটিতে থাকবে তিনজন বিরোধীদলীয় এবং দুইজন সরকারি দলের প্রতিনিধি; দুদকের নিয়োগ কমিটিতে একজন সরকারি দলের এবং তিনজন বিরোধীদলের সদস্য; ন্যায়পাল নিয়োগে থাকবে দুইজন সরকারি দলের, তিনজন বিরোধীদলের এবং দুইজন নিরপেক্ষ সদস্য; আর মহাহিসাব নিরীক্ষক নিয়োগে দুইজন সরকারি দলের বিপরীতে পাঁচজন বিরোধীদলীয় প্রতিনিধি থাকবেন।
নাছিরের মতে, “এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে সরকারি দলের প্রতিনিধিরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। ফলে বিরোধীদল ও টেকনোক্র্যাট সদস্যরা প্রভাব বিস্তার করবে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, দলের প্রধান নির্বাচন দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এবং প্রধানমন্ত্রী দলের প্রধান হতে পারবেন না—এমন বিধান দেওয়া হলে তা মৌলিক অধিকারবিরোধী হবে।
সবশেষে নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, বিএনপি এসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে কারণ এগুলো মেনে নিলে নির্বাচিত সরকার কার্যত ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে। বিরোধীদল অযাচিতভাবে সরকারের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করবে, ফলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নিজের নীতি বাস্তবায়নে বাধার মুখে পড়বে। এতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং সরকার অকার্যকর হয়ে পড়বে।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “নোট অব ডিসেন্ট” নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, তা সম্পূর্ণ অমূলক। বিএনপি দেশের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য ও নির্বাচিত সরকারের কার্যকারিতা বজায় রাখতেই এ অবস্থান নিয়েছে।
