আগে সক্ষমতা, পরে এলডিসি উত্তরণ: আমীর খসরু

আগে সক্ষমতা, পরে এলডিসি উত্তরণ: আমীর খসরু ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:৫৪, ২ নভেম্বর ২০২৫

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি যখনই রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ছিল স্থিতিশীল, কর্মসংস্থান ছিল বিস্তৃত, ব্যবসা-বাণিজ্যে ছিল প্রাণচাঞ্চল্য।

দলটি ক্ষমতায় থেকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য নানা প্রণোদনা দিয়েছে, বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান সংকট ও পুনরুদ্ধারের পথ” শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ)।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজিবিএর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল। উপস্থিত ছিলেন টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ, বিকিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদসহ আরও অনেকে।

আমীর খসরু বলেন, ব্যবসার জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে “ফিল গুড ফ্যাক্টর” বা আস্থা। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ব্যবসায়ীরা সেই আস্থা পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতা না পেয়ে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

তিনি বলেন, “বিএনপির মূল স্লোগান অর্থনীতির গণতান্ত্রিকীকরণ। অর্থনীতিতে গণতন্ত্র না থাকলে বা একক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকলে উন্নয়ন হয় না, বরং দুর্নীতি বাড়ে।”

তার মতে, বাংলাদেশ এখন “অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রিত দেশ” (Over regulated country)। এতে সৎ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, আর সুযোগ নিচ্ছেন দুর্নীতিবাজরা। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “ভিয়েতনাম আমাদের ছাড়িয়ে গেছে কারণ তারা তাদের অর্থনীতি ডিরেগুলেট করেছে।”

দেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণ নিয়ে আমীর খসরু বলেন, “আমরা এখনো প্রস্তুত নই। গণতন্ত্র অনুপস্থিত, দায়বদ্ধতা নেই, সরকারের জবাবদিহি নেই। এই অবস্থায় এলডিসি থেকে উত্তরণের কোনো বাস্তব সুফল আসবে না। প্রথমে সক্ষমতা তৈরি করতে হবে, তারপর উত্তরণ।”

তিনি প্রশ্ন রাখেন, “দেশে এখন কি কোনো স্থিতিশীল শেয়ারবাজার আছে? ব্যবসার নীতিমালা আছে? ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা আছে?”

শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “অর্থনীতি ও গার্মেন্ট খাতে যে উন্নয়নের ভিত্তি, তা রেখেছেন জিয়াউর রহমান ও সাইফুর রহমান। এখন নির্বাচিত সরকার ছাড়া সেই স্থিতিশীলতা ফিরবে না।”

বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, “বিমানবন্দরের আগুনে আমাদের স্যাম্পল ও ক্রয়াদেশ নষ্ট হয়েছে। এতে বিদেশি ক্রেতারা আস্থা হারাচ্ছেন।”

বিজিবিএ সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমরা ক্রমেই অর্ডার হারাচ্ছি, বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। রাজনীতিকরা যদি নীতিগত সহায়তা দেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা এনে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারব।”

তিনি বিজিএমইএ, বিকিএমইএ ও বিজিবিএকে একসঙ্গে কাজ করে দেশের পোশাক শিল্প ও সামগ্রিক অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানান।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement