বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছরে যারা দুর্নীতি ও লুটপাটে জড়িত ছিলেন তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
তবে এ কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত করে নতুন করে বেকারত্ব সৃষ্টি করা কোনোভাবেই সমাধান হতে পারে না। দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত আরও বড় ক্ষতি ডেকে আনে বলে তিনি মনে করেন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বিএনপির অর্থনৈতিক দর্শন, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত মত প্রকাশ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল ও গতিশীল রাখার বিষয়ে সবসময়ই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ওপেন ইকোনমি নীতিমালার পথচলা শুরু করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
আর ক্ষমতায় এসে বিএনপি সব সময় অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। তার ভাষায়, বিএনপি কখনোই দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়নি, বরং উন্নয়নেই ভূমিকা রেখেছে—এ দাবি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।
ব্যবসায়ীদের প্রতি আস্থা রাখার প্রয়োজনীয়তাও জোর দিয়ে উল্লেখ করেন তিনি। ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ ঠিক রাখতে নীতিগত পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা বদলাতে হবে। তাদের প্রতি বিশ্বাস না রাখলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। লুটপাটকারীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করে দেওয়াটা কোনোভাবে যুক্তিসংগত নয়—এ বিষয়টি নীতি প্রণেতাদের ভাবতে হবে।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের জন্য কেবল অর্থনৈতিক পরিকল্পনাই নয়, পাশাপাশি একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক পথরেখাও প্রয়োজন। যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে বিএনপি সই করেছে, সেগুলোর অনেকগুলো দল বহু আগেই সামনে এনেছিল। এখন সেই সব সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা অপরিহার্য।
নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি কেবল নতুন বাংলাদেশ নয়, বরং একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়ভিত্তিক দেশ গড়তে চায়—যেখানে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে, নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত হবে এবং সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে টেকসই উন্নয়নের পথে।
