মনোনয়ন পাওয়ার আগেই তাসনিম জারার প্রতিজ্ঞা

মনোনয়ন পাওয়ার আগেই তাসনিম জারার প্রতিজ্ঞা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৫:২৯, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা জানিয়েছেন, দেশে একজন প্রার্থী আইন অনুযায়ী নির্বাচনী ব্যয়ে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন।

কিন্তু বাস্তবে প্রায় কেউই এই সীমা মানেন না। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী অনেক প্রার্থী ২০, ৫০ কিংবা ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেন, অথচ নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে ঘোষণা দেন যে মাত্র ২৫ লাখ টাকাই খরচ হয়েছে। তাঁর মতে, এতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার শুরুটিই হয়ে যায় আইন ভাঙা এবং অসত্য বলার মধ্য দিয়ে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য তুলে ধরেন।

তিনি লেখেন—তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই ধরনের অসততা ও মিথ্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন। এনসিপির পক্ষ থেকে ঢাকা–৯ আসনে মনোনয়ন চাইছেন তিনি, এবং অঙ্গীকার করেছেন যে আইনসিদ্ধ সীমার বাইরে তিনি অতিরিক্ত এক টাকাও ব্যয় করবেন না।

তাসনিম জারার ভাষ্যে, অনেকেই তাঁকে বলেছেন এত কম বাজেটে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তিনি তাদেরকে জানিয়েছেন, এটি সম্ভব এবং তারা প্রমাণ করতে চান যে সীমিত ব্যয়েও নির্বাচনে লড়া যায়। তিনি আরও জানান, নির্বাচনের আগে থেকেই নিয়মিতভাবে জানানো হবে কত অর্থ তিনি পেয়েছেন এবং কীভাবে তা ব্যয় করা হচ্ছে—সবকিছুই সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে।

তিনি মনে করেন, সততা ও স্বল্প ব্যয়ে নির্বাচনী প্রচারণার একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করা যাবে, যেখানে অর্থ ও পেশিশক্তির ওপর নির্ভর না করেও সামনে এগোনো সম্ভব। তবে এ পথচলায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, অন্য প্রার্থীরা যেখানে বিভিন্ন কাজ টাকার বিনিময়ে করান, সেখানে তাঁদের প্রচারণা এগিয়ে নিতে প্রয়োজন স্বেচ্ছাসেবী টিম—যারা সময়, শ্রম ও অংশগ্রহণ দিয়ে নানা দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি জানান, আপনি ঢাকার খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা বা মান্ডা এলাকার বাসিন্দা হোন কিংবা দেশের অন্য কোনো অংশে কিংবা বিদেশে অবস্থান করুন—আপনি চাইলে এই প্রচারণায় যুক্ত হতে পারেন। এর জন্য কীভাবে সাহায্য করা সম্ভব তা জানানোর উদ্দেশ্যে একটি ছোট ফর্ম তৈরি করা হয়েছে।

সমর্থকরা যেসব উপায়ে সহায়তা করতে পারেন, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন—

  • কেউ গ্রাফিক ডিজাইন করতে পারেন

  • কেউ ভিডিও ধারণ বা সম্পাদনা করতে পারেন

  • কেউ উঠান বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন

  • কেউ ফান্ড সংগ্রহে সহযোগিতা করতে পারেন

  • কেউ দলের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণার বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন

  • এর বাইরেও আরও অনেক ভূমিকা আছে, এবং আগ্রহীরা চাইলে নতুনভাবে নিজস্ব ভূমিকার প্রস্তাবও রাখতে পারবেন

তিনি জানান, ফর্মটি পূরণ করতে সময় লাগবে মাত্র দুই মিনিট।

তাসনিম জারার কথায়, এবারের নির্বাচন যেন জনগণের নিজেদের নির্বাচন হয়ে ওঠে—সেটাই তাঁর লক্ষ্য। তিনি প্রত্যাশা করেন, সবাই মিলে একটি টিম গড়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ধাপে ধাপে এই প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। তাঁর বিশ্বাস, সততার ভিত্তিতে রাজনীতি করা সম্ভব, এবং তারা একসঙ্গে সেটি প্রমাণ করতে চান।

তিনি আরও লিখেছেন, যদি রাজনীতি মিথ্যা, দুর্নীতি ও পেশিশক্তির ঘেরাটোপ থেকে বের হয়ে মানুষের হাতে ফিরে আসে, তবে দেশের সম্ভাবনা অসীম।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement