সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬-এর ড্র অনুষ্ঠান, যা ঘিরে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস তুঙ্গে পৌঁছেছে।
তবে ড্র শুরু হওয়ার ঠিক আগে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে এক বিস্ময়কর দাবি।
জানানো হয়, বিখ্যাত বুলগেরীয় ভবিষ্যদ্বক্তা বাবা ভাঙ্গা নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন—২০২৫ সালে পৃথিবী প্রথমবারের মতো ভিনগ্রহের কোনো সত্তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে এবং ঘটনাটি ঘটবে এক “বড় ক্রীড়া আসর” চলাকালীন।
ব্রিটেনের দ্য মেইল, স্কাই হিস্টোরি সহ বহু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বাবাভাঙ্গাকে ঘিরে এমন ভবিষ্যদ্বাণীর উল্লেখ পাওয়া গেছে। দাবি করা হয়েছে, সেই সময় আকাশে এমন একটি “অদ্ভুত আলো” বা অজানা উড়ন্ত বস্তু দেখা দেবে, যা কোটি কোটি মানুষ সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন এবং যা বৈজ্ঞানিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম দেবে।
তবে এসব দাবিকে ঘিরে গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের অবস্থান একেবারেই ভিন্ন। তারা পরিষ্কার জানিয়েছেন—বাবা ভাঙ্গা কখনোই কোনো ভবিষ্যদ্বাণী লিখিতভাবে রেখে যাননি।
তাঁর নামে প্রচলিত বেশিরভাগ ভবিষ্যদ্বাণী মৌখিক গল্প, অনুসারীদের ব্যাখ্যা অথবা মৃত্যুর অনেক বছর পরে যোগ করা নানা কল্পকাহিনি। তাই এসবের সত্যতা নিরূপণ অত্যন্ত কঠিন।
বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেন, চেরনোবিল বিপর্যয়, ২০০৪ সালের সুনামি বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসা—এসব ঘটনাকে নিয়েও পরবর্তীতে অতিরঞ্জিত বা অসঙ্গত ব্যাখ্যা যোগ করা হয়েছে।
এ কারণে বাবা ভাঙ্গার ভিনগ্রহী–সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীও অনেক গবেষকের কাছে ‘মিডিয়া–সৃষ্ট মিথ’ বা গুজব হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ফুটবল দুনিয়া এখন পুরোপুরি মনোযোগ দিচ্ছে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপকে ঘিরে নতুন এক অধ্যায়ের দিকে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই বিশ্বকাপে অংশ নেবে ৪৮টি দল এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬টি শহরে হবে মোট ১০৪টি ম্যাচ। ফুটবলের বিস্তৃত ভূগোল, বৈচিত্র্য ও উত্তেজনা এই বিশ্বকাপকে তৈরি করবে সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক ক্রীড়া উৎসব।
ফিফা কর্মকর্তারাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—বিশ্বকাপের সঙ্গে কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা বা রহস্যজনক ঘটনার সম্পর্ক নেই। বরং এটি হবে ফুটবলের নতুন যুগের সূচনা। ফলে বাবাভাঙ্গার নামে প্রচলিত নানা গুজব থেকে দূরে সরে প্রকৃত ফুটবল–উন্মাদনাতেই মনোযোগ দিচ্ছেন ভক্তরা।
সবশেষে, ফুটবলবিশ্বের প্রত্যাশা একটাই—ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ হবে কোটি মানুষের আনন্দ, আবেগ আর ক্রীড়ামৈত্রীর অনন্য উৎসব; ভিনগ্রহী যোগাযোগের গল্প নয়।


































