কলকাতায় হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৪

কলকাতায় হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

Published : ১০:৩৪, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে মধ্য কলকাতার ঋতুরাজ হোটেলে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এতে বেশ কয়েকজন দগ্ধ হয়েছেন। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর হাসপাতাল এবং নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মধ্য কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির ওই হোটেলে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 

তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা পুরোপুরি নেভাতে পারেননি ফায়ার ফাইটাররা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর উদ্ধারকাজে ব্যস্ত রয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।  

পুলিশের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জনকে উদ্ধার করা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দমবন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

মৃতদের মধ্যে ২ জন শিশু, একজন নারী এবং ১১ জন পুরুষ। মৃতদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঘটনার পর পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্য প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যে না ঘটে সেজন্য অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কঠোর নজরদারি করার আহ্বান জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, আমি রাজ্য প্রশাসনের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে উদ্ধার, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানাই। এছাড়াও, ভবিষ্যতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করার জন্য অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা এবং কঠোর পর্যবেক্ষণের আবেদন করেন।

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। কলকাতা করপোরেশনের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। আগুন লেগেছে, অনেক মানুষ এখনো ভবনে আটকে আছেন। কোনো নিরাপত্তা বা সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। আমি জানি না করপোরেশন কী করছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কীভাবে অগ্নিকাণ্ড? হোটেলে আদৌ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল? তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।  

এর আগেও কলকাতা শহরে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অন্যতম ২০১০ সালের মার্চ মাসে স্টিফেন কোর্টের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৩ জন এর মৃত্যু হয়েছিল। 

এরপর ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতালে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।  

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement