বেরোবির ১৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

Published : ১৪:৪৪, ৮ মে ২০২৫
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় অবশেষে ৯ মাস পর মামলা করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন। নানা আলোচনা সমালোচনার পর বুধবার (৭ মে) তাজহাট থানায় মামলাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ।
মামলায় ৭১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮০-১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের ৩৬ জন, দু’জন শিক্ষক, ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ ৮ জন ও বহিরাগত ১২ জনকে আসামি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণসহ সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি মামলা করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার টগর, সহসভাপতি বিধান বর্মণ, গ্লোরিয়াস ফজলে রাব্বী, তানভির আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক শাহিদ হাসান সিদ, সহসভাপতি মমিনুল হক, আখতার হোসেন, শাহীন ইসলাম, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, সহকারী রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমান তুফান, কর্মচারী আমির হোসেন, সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, উপ-রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম, প্রক্টর অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, মাস্টার রোল কর্মচারী নুরনবী, নিরাপত্তা শাখার কর্মচারী নুর আলম, সহকারী রেজিস্ট্রার (ডেসপাস) মোক্তারুল ইসলাম, সেমিনার সহকারী আশিকুন্নাহার টুকটুকি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাহবুবা আক্তার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের মাহবুবার রহমান বাবু, প্রক্টর অফিসের মো. আপেল, সাবেক ভিসির পিএস আবুল কালাম আজাদ, তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিকরুল মাহবুব শোভন, যুবলীগ কর্মী শামিম হাসান, শাহারিয়ার নয়ন, আহসান হাবিব লালন, আল আমিন, ছাত্রলীগ কর্মী ইশাক রিজন, সায়ির বিন আশরাফ আনন্দ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আতিকুল বারী জামিন, জাকির মুসা, রংপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিক বনি, আওয়ামী লীগ কর্মী মো. নয়ন, তাজহাট থানার যুবলীগ সেক্রেটারি শিপন প্রমুখ।
এছাড়া তৎকালীন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেন, আরিফুজ্জামান, সাবেক ওসি রবিউল ইসলাম, বেরোবি ফাঁড়ি ইনচার্জ বিভূতিভূষণ রায়, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, আমির আলী, উপ- পুলিশ কমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ উপ-কমিশনার শাহানুর আলম পাটওয়ারী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ১১, ১৫ ও ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালান। ১১ জুলাই শহীদ আবু সাঈদকে পোমেল বড়ুয়া চড়থাপ্পড় মারেন এবং মাসুদুল হাসান হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরেন।
এছাড়া ১৬ জুলাই পুলিশ, বহিরাগতসহ অজ্ঞাতনামা ৮০-১০০ জন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি, লাঠিসোঁটা, লোহার রড, হাত বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পর্যায়ক্রমে হামলার কথা উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম সর্দারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন, প্রতিবেদন তৈরি, লিগ্যাল অ্যাডভাইজার নিয়োগসহ প্রক্রিয়াগুলো করতে সময় লাগায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ৩৬ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক দু’জন, কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৩ জন, তৎকালীন পুলিশ প্রশাসনের ৮ জন ও বহিরাগত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বিডি/ও