জুলাইয়েই তিস্তা গার্ডার সেতুর উদ্বোধন: সচিব রেজাউল মাকছুদ

জুলাইয়েই তিস্তা গার্ডার সেতুর উদ্বোধন: সচিব রেজাউল মাকছুদ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

Published : ১৮:৫১, ৫ জুলাই ২০২৫

জুলাই মাসেই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মিটার তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুটি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেতুটির অল্প যে কাজগুলো বাকি আছে তা অতিদ্রুত শেষ করা হবে। এ পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই সেতুর মূল কাঠামোর কাজ প্রায় শেষ। চলতি মাসেই শেষ করা হবে সংযোগ সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও নদীশাসনের কাজ। 

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল
মাকছুদ জাহেদী গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারী হেড কোয়ার্টার সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুর চলমান নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

রেজাউল মাকছুদ জাহেদী আরও বলেন, দেশ ও মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জুলাই আন্দোলনকে স্বরণীয় করে রাখতে জুলাই মাসেই সেতুটি উদ্বোধন করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কাজগুলো এখনও শেষ হয়নি তা অতিদ্রুত শেষ করার জন্য বলা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে উপদেষ্টার সাথে আলাপ করে উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। 

সচিব বলেন, জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিস্পত্তি করা হবে। রাস্তার কাজ যেটুকু বাকি আছে তা চলতি মাসেই শেষ করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর দু’পাশে অনেক কালভার্ট, ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। সংযোগ সড়কের কাজ অল্পদিনের মধ্যেই শেষ হবে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ মিয়া, যুগ্ম সচিব সামছুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব আবুল হাসান, সচিবের একান্ত সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেন, রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুল ওহাব খান, প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মালেক, রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুসা, জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী, সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুর রহমান প্রামানিক, উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান প্রমূখ। 

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ও ইফাদের (ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট) অর্থায়নে শুরু হয় তৃতীয় তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ। চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ৭৩০ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাজটি হাতে নেয়। শুরুতে ২০২৩ সালের জুনেই কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২৩ করা হয়।

এরপর জুন ২০২৪ এবং সর্বশেষ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন নতুন সময়সীমা দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলাকে যুক্ত করতে নির্মিতব্য তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুটি শুধু যোগাযোগ মাধ্যম নয়, এটি মানুষের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। মূল সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩৬৭ কোটি টাকা। 

সংযোগ সড়ক, নদীশাসন, কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণে খরচ হয়েছে আরও ৩৬৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা।

১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে দুই পাশে ৩.১৫ কিলোমিটার করে নদীশাসন, সুন্দরগঞ্জে ৫০ কিলোমিটার এবং চিলমারীতে ৭.৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হচ্ছে।

সেতুর গঠনে রয়েছে ২৯০টি পাইল, ৩০টি পিলার, ২৮টি স্প্যান, ১৫৫টি গার্ডার। সেতুর উভয় পাশে পানি নিষ্কাশনে ১২ ব্রীজ ও ৫৮টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement