রংপুরে জামায়াতের জনসভা: মাঠে জায়গা না পেয়ে সড়কে অবস্থান

রংপুরে জামায়াতের জনসভা: মাঠে জায়গা না পেয়ে সড়কে অবস্থান

রংপুর প্রতিনিধি:

Published : ১৮:৪৩, ৪ জুলাই ২০২৫

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পর নির্বাচনসহ ৪ দফা দাবিতে আজ রংপুরে জনসভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

১৭ বছর পর রংপুরে জনসভাকে কেন্দ্র সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ট্রাক,কাভার্ডভ্যান, বাসে করে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকাল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতের বিভাগীয় জনসভা শুরু আগে মাঠ কানায় কানায় ভর্তি
হয়। মাঠে জায়না না পেয়ে মানুষ আশেপাশের রাস্তায় অবস্থান নেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও অবিচার জনগণকে অবহিতকরণ এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আজ বিকাল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভায় দুই লক্ষাধিক মানুষ সমাগমের টার্গেট নিয়েছে দলটি। 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ৩৩টি আসন তাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার লক্ষ্যে দনের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি বিভাগের মানুষের মধ্যে দেশকে নিয়ে জামায়াতের পরিকল্পনার বিষয়ে বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

মাঠের ভেতরে প্রবেশের জন্য নতুন দুটি প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া নারীদের পর্দার সঙ্গে বক্তব্য শোনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করার পাশাপাশি রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বড় বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। 

সেই সঙ্গে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়। মাইকিং ছাড়াও জেলা উপজেলায় করা হয়েছে গণসংযোগ। মবিশাল মোটরসাইকেল র‌্যালি করেছে দলটি। বিভাগীয় জনসভা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে প্রচারণাসহ ১৩টি উপ-কমিটি দিন-রাত কাজ করেছে। এছাড়াও মেডিকেল টিম, নিজস্ব ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।

বিশেষ বক্তা ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। এছাড়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। 

রংপুর বিভাগীয় জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব কেএম আনোয়ারুল হক কাজল বলেন, বিভাগীয় জনসভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাই মুখিয়ে ছিল। আমরা আশা করছি, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জনসমাগম ঘটবে। 

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জনসভা তো দূরের কথা প্রকাশ্যে কথা বলারও সুযোগ ছিল না। ১৬ বছর জুলুম নির্যাতনের পর ফ্যাসিস্টদের পতনে এ দেশের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। এই স্বস্তিকে দেশ গঠনের কাজে লাগাতে চাই। দেশের মানুষ এবার ঐক্যবদ্ধ।

এ দেশের মানুষ দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। এবারে দেশের মানুষ তাদের পছন্দের মার্কায় ভোট দিতে পারবে। রংপুর বিভাগের জনসভার জন সমাগমই প্রমাণ করবে জামায়াতের জনপ্রিয়তা। 

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম জানান, রংপুর বিভাগীয় জনসভায় দুই লক্ষাধিক লোক সমাগম ঘটবে। জনসভাকে কেন্দ্র করে রংপুর বিভাগের জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এই স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে ফলাফল ঘরে তোলা হবে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement