ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হওয়া উচিত: শফিকুর রহমান

Published : ১৭:১০, ৩ মে ২০২৫
দেশের আবহাওয়া ও অবস্থার দিকে তাকিয়ে ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (৩ মে) সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে। তবে যদি এ সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত না।
এখানে আমাদের দেশের আবহাওয়া এবং পারিপার্শ্বিকতার বিষয় আছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ এবং মার্চ মাসের ৩ ভাগের দুই ভাগ রোজা থাকবে। সে সময়ে নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সংস্কার কার্যক্রম যেটা হাতে নেওয়া হয়েছে তা যদি আক্ষরিকভাবেই গতিশীল করা হয় এবং অংশীজনরা সেরকম সহযোগিতা করেন তাহলে সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন সম্ভব। ফ্যাসিবাদের পতন হলো নাকি ফ্যাসিবাদীদের পতন হলো তা নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে। আমাদের দুঃখের ইতিহাসে জাতি হিসেবে আমরা এখনো ইতি টানতে পারিনি।
জামায়াত আমির বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। আমরা আমদের দলীয় সহকর্মীদের অনুরোধ করেছিলাম, সবাই যেন ধৈর্য ধরে, শান্ত থাকে।
এর পাশাপাশি আমরা সাধারণ মানুষকেও আহ্বান জানিয়েছি। অন্যান্য দলও সেই আহ্বান জানিয়েছে। অন্যান্য দেশে এ সময়ে যা ঘটেছে তার তুলনায় তেমন কিছুই ঘটেনি। যা ঘটেছে তাও আমরা সমর্থন করি না। সেদিনই আমরা বলেছিলাম, আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। প্রতিকার চাইতে হবে আইনি প্রক্রিয়ায়।
আমাদের সহকর্মীরা এই ডাকে সাড়া দিয়েছে। কিছু জায়গায় এমন ঘটলেও সে জায়গায় আমরা চেহারার দিকে না দেখে ব্যবস্থা নিয়েছি। এরপর আমাদের শহীদ পরিবার ও আহতদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আহতদের জন্য অনেক বেশি করতে পারিনি। তবে তাদের জন্য যতটুকু পেরেছি তা করেছি, এর বাইরে সরকারকে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছি। এরপর থেকে ফেনীতে যে বন্যা হয়েছে সেখানে আমরা শুরু থেকে অবস্থানের চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টায় যদি কিছুটা হলেও তাদের সান্ত্বনার কারণ হয় তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য যেখানে জনগণের ভোগান্তি সেখানে সবার আগে সাড়া দেওয়া হয়তো সবসময় সম্ভব হয় না।
আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে এবং যে ধরনের ভয়াবহতা বন্ধে জামায়াত ইসলাম কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভলান্টিয়ার ভাইয়েরা সে সময় যারা মাঠে ছিল তারা টানা ১৫ দিন অমুসলিমদের বাড়িঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যে চেয়েছে তার ব্যবসা আমরা রক্ষা করেছি। এর পাশাপাশি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা এগিয়ে এসেছেন। অন্যান্য কিছু সংগঠনের লোকদেরও আমরা দেখেছি।
এ সময় যারা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলেছি। এছাড়া সাড়ে ১৫ বছরের সময় ধরে যারা হত্যা, গণহত্যা গুম, খুন, ধর্ষণ করেছে, দেশের মানুষের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে তাদের যাতে আইনের আওতায় আনা হয় তার দাবি আমরা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে যাবো। তাদের প্রাপ্য শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
এই সরকার জন-আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করছি৷ তবে এর মাঝে সরকারের কিছু উপদেষ্টা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করছেন। যা থেকে তাদের দূরে থাকার আহ্বান জানাই।
বিডি/ও