সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার: গড় লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার ওপরে, ঢাকা- চট্টগ্রামে সূচকে বড় উত্থান

Published : ১২:১০, ২৭ জুলাই ২০২৫
সপ্তাহজুড়ে টানা উত্থানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গড় লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার ওপরে, সূচক বেড়েছে সবকটি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বড় উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬৮৪ পয়েন্ট।
পুরো সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২৫৯ পয়েন্ট, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি।
বাকি দুই সূচক শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস ৫২ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্ল-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৫৩ পয়েন্ট।
ঢাকার বাজারে সাপ্তাহিক গড় লেনদেন বেড়ে হয়েছে ৮৫৯ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৬৮১ কোটি টাকা। এ সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন বেড়েছে ২৬ শতাংশ।
ডিএসইতে দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। সপ্তাহ শেষে ২১৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৪৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
খাতভিত্তিক উত্থান
আগের সপ্তাহে ব্যাংক খাত সুবিধা করতে না পারলেও এই কয়েকদিনের লেনদেনে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩০, কমেছে ৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩ ব্যাংকের শেয়ারের দাম।
ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭৯ শতাংশ এবং লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ৭৬ শতাংশ।
ব্যাংক খাতের চেয়ে আরও ভালো অবস্থানে আছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ার। ১৩৩ শতাংশ দাম বেড়েছে এ খাতের শেয়ারে এবং লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ১০৯ শতাংশ।
২১ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেনি একটিরও এবং অপরিবর্তিত আছে ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
উত্থানের ধারা বজায় আছে সাধারণ বীমা এবং জীবন বীমা খাতে। সাধারণ বীমা খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৪ শতাংশ এবং জীবন বীমা খাতে উত্থান হয়েছে ৬ শতাংশ।
এ ছাড়া সিমেন্ট, সিরামিক, প্রকৌশল, ওষুধ, আবাসন এবং টেলিকম খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
খাতভিত্তিক পতন
সাপ্তাহিক লেনদেনে তলানিতে আছে পাটশিল্প খাত। এ খাতের তিন কোম্পানির সবকটির শেয়ারের দাম কমেছে। এ কয়দিনের কার্যদিবসে পাটশিল্প খাতের শেয়ারের দাম এবং লেনদেন কমেছে ৩৯ শতাংশ।
পাটশিল্পের পরেই পতনের দিক থেকে শীর্ষে আছে কাগজ এবং মুদ্রণ শিল্প। এ খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৩৪ শতাংশ। সুবিধা করতে পারেনি মিউচুয়াল ফান্ড, দর কমেছে ২১ শতাংশ।
চামড়া, টেক্সটাইল এবং পর্যটন খাতের শেয়ারের দাম কমেছে ২৫ শতাংশের বেশি। টেলিকম খাতে শেয়ারের দাম বাড়লেও কমেছে আইটি খাতে। আইটি খাতের শেয়ারের দাম কমেছে ১৬ শতাংশের বেশি।
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক লেনদেন
সারা সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। ব্যাংকটির গড় লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি টাকা। সবশেষ ৬৮ টাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের পরেই সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। লেনদেনে ভালো অবস্থানে আছে সিটি ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, খান ব্রাদার্স, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা এবং ওরিয়ন গ্রুপের শেয়ার।
গত সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ব্যাংক এশিয়া। এছাড়া মারিকো, ব্র্যাক ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাব, খান ব্রাদার্স এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ব্লক মার্কেটে শেয়ার বিক্রিতে ছিল শীর্ষ তালিকায়।
দরবৃদ্ধিতে শীর্ষে আছে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি উত্তরা ফাইন্যান্স। গত সপ্তাহে কোম্পানিটি থেকে রিটার্ন এসেছে ৫২ শতাংশের বেশি। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১১ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকায়।
অন্যদিকে সাপ্তাহিক লেনদেনে তলানিতে এক্সপ্রেস ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির রিটার্ন কমেছে ১৫ শতাংশের বেশি। বি ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪৩ টাকিয়া থেকে কমে হয়েছে ৩৬ টাকা।
বড় উত্থান চট্টগ্রামেও
ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বড় উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬৮৪ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৩৬ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮৭, কমেছে ১২২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতো সিএসইতেও শীর্ষে উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনিভেস্টমেন্ট। এছাড়া শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় আছে এনসিসি ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, ব্যাংক এশিয়া, মিডাস ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, প্রাইম ব্যাংক, পিপলস লিজিং এবং পিপলস ইনস্যুরেন্স।
২৪ শতাংশ দাম কমে সিএসইতে তলানিতে সিইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট। অন্যদিকে এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ার। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় আছে লাভেলো, ওয়ালটন হাইটেক, খান ব্রাদার্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, রবি, ওরিয়ন ফিউশান এবং লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স।