জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার প্রস্ততির চুড়ান্ত পর্যায়ে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার প্রস্ততির চুড়ান্ত পর্যায়ে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র

পাবনা প্রতিনিধি:

Published : ১৮:০৩, ২৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনা পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনের প্রস্তুতির পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। 

সম্প্রতি প্রথম ইউনিটের জন্য প্রধান ও সহায়ক ট্রান্সফরমারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। ফলে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে কেন্দ্রটি যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার মাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অচিরেই রূপপুর প্রকল্পে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’সহ বেশ কিছু নিরাপত্তাজনিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। কোনো কোনো পরীক্ষার সময় বাষ্প নির্গমনের ফলে জনগণের কাছে অপ্রত্যাশিত শব্দ শোনা যাবে। তবে এটি পরীক্ষারই অংশ এবং পূর্বপরিকল্পিত। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এতে কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি নেই। পুরো প্রক্রিয়াটি নিরাপদ। রোসাটম নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, তাই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিরাপত্তাচাহিদা পূরণ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রধান সেটআপ ট্রান্সফরমারগুলোর কাজ হলো টার্বাইন জেনারেটরে উৎপাদিত ২৪ কেভি বিদ্যুৎকে ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করা, যা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য। প্রতিটি ট্রান্সফরমারের ক্যাপাসিটি ১৫৯৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত। যা প্রথম ইউনিটে উৎপাদিত ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চেয়েও বেশি। 

এর ফলে নিরবচ্ছিন্ন ও প্রয়োজনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা সম্ভব হবে। প্রতিটি ট্রান্সফরমার ফেজের ওজন প্রায় ৪০০ টন এবং এগুলোর সংযোগ সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত হয়েছে ১৫০ কিলোমিটারের অধিক কেবল।

এছাড়া ইউনিটটির অভ্যন্তরীণ সব সিস্টেমে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক ট্রান্সফরমারগুলোর কমিশনিংও সম্পন্ন হয়েছে। দ্বৈত মোডে কাজ করতে সক্ষম এই ট্রান্সফরমারগুলো জাতীয় গ্রিড ও জেনারেটর উভয় উৎস থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারবে। ইতিপূর্বে অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলোর জন্য ব্যবহৃত হতো স্ট্যান্ডবাই ট্রান্সফরমার।

এ প্রসঙ্গে অ্যাটমস্ত্রয়এক্সপোর্টের বাংলাদেশ প্রকল্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলেক্সি ডেইরি বলেন, ‘এটি সংশ্লিষ্ট সব সমন্বিত প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার ফল। কঠিন লজিস্টিকস ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সবাই চমৎকারভাবে কাজটি সম্পন্ন করেছে। ইউনিটির নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্যভাবে চালুর ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুটি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লী স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের প্রকৌশল বিভাগ মোট ২৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেনারেল কন্ট্রাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement