ইসরায়েলের উদ্বেগ বাড়াতে পারে ইরানের যে ক্ষেপণাস্ত্র

ইসরায়েলের উদ্বেগ বাড়াতে পারে ইরানের যে ক্ষেপণাস্ত্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

Published : ১৫:৫১, ১৪ জুন ২০২৫

মাত্র এক মাসে আগেই তেহরান প্রকাশ্যে এনেছিল তার নতুন অস্ত্র। শুক্রবার (১৩ জুন) গভীর রাতে সেই মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কাসিম বশির ব্যবহার করেই তারা ইসরায়েলের তেলআবিবে সফল হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার পাল্লার কঠিন জ্বালানি-চালিত কাসিম বশির ক্ষেপণাস্ত্র গত মে মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর বিমান বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ় নাসিরজাদেহ। 

বস্তুত এটি ইরান ফৌজের গত এক দশক ধরে ব্যবহৃত ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হজ কাসিমের উন্নততর সংস্করণ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সে সময়ই আজিজ় দাবি করছিলেন, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম হবে কাসিম বশির।

ইরান থেকে ইসরায়েলের দূরত্ব ১৫০০ কিলোমিটার। ইজ়রায়েলের আকাশের ‘নিশ্ছিদ্র রক্ষক’ আয়রন ডোম মূলত ৩টি স্তরে কাজ করে- রাডারের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করা, দ্রুত সেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য তৎপর হওয়া এবং ‘ইন্টারস্পেটর ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়ে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করা। এছাড়া তেল আবিবের কাছে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ‘থাড’।

ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে  সীমান্ত নেই। ইরাক, সিরিয়া বা জর্ডানের আকাশসীমা দিয়ে উড়ে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে ইসরায়েলের আকাশসীমায় পৌঁছাতে হয়। ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে জর্ডান, ইরাক নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-কে।

সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ অবশ্য ইসরায়েলকে ইরানের বিরুদ্ধে নিজ দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করার অনুমতি কখনও দেননি, তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা গত ডিসেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর ইসরায়েলের জন্য সিরিয়ার আকাশসীমা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

ইরান যখন ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, তখন সাধারণত প্রথমেই প্রতিবেশী দেশ ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী তা ইসরায়েলকে জানিয়ে দেয়। তারপর ইসরায়েলে আঘাত হানার আগেই, অর্থাৎ ইরাক কিংবা জর্ডানের আকাশসীমায় থাকা অবস্থাতেই সেসব ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইন্টারসেপ্ট’ ধ্বংস করে দেয় মার্কিন বাহিনী।

এত বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে সফল হামলা চালিয়েছে উচ্চ গতিসম্পন্ন কাসিম বশির। উপসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী এবং ইজ়রায়েলে নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারাকে তেহরানের ‘চমকপ্রদ সাফল্য’ বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement