স্বাস্থ্যসেবা নার্সিং খাত: রপ্তানিযোগ্য খাতে রূপান্তরের সম্ভাবনা

স্বাস্থ্যসেবা নার্সিং খাত:  রপ্তানিযোগ্য খাতে রূপান্তরের সম্ভাবনা

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ০১:৫০, ২৩ মে ২০২৫

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ কল্পনা করলেই একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যায়, যেখানে দক্ষতা, প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে গড়ে উঠবে একটি প্রতিযোগিতাযোগ্য নার্সিং শিল্প।   

বর্তমানে দেশে শিক্ষার্থী-নার্স অনুপাত মাত্র ৩:১, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী এই অনুপাত হওয়া উচিত ১:৩। তদুপরি, দেশে স্বাস্থ্যখাতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত নার্সের ঘাটতি প্রায় ৮২%। এই ঘাটতি পূরণ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন যোগ্যতা অর্জনের এখনই সময় নার্সিং খাতকে একটি যোগ্যতাভিত্তিক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠার।

বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে, দক্ষ নার্সের অভাব অত্যন্ত প্রকট। ইউরোপীয় দেশগুলোতেও জনসংখ্যার বার্ধক্য ও স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণের ফলে নার্সিং পেশায় দ্রুত চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশের মেধাবী শ্রমশক্তি–প্রশিক্ষিত নার্সদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। নার্সিং খাতে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা, এবং কারিগরি শিক্ষা উন্নয়ন এই খাতকে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নেই নয়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি মারফত জাতীয় প্রবৃদ্ধির নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে।

এই লক্ষ্যে পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে উন্নয়ন সংস্থা উদ্দীপন। ঢাকার মহাখালিতে স্থাপিত হচ্ছে সিমুলেশন ও ভার্চুয়াল ল্যাব – যেখানে ব্যবহার করা হবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (VR) ও অগমেন্টেড রিয়ালিটি (AR) প্রযুক্তি, যা মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তবঘনিষ্ঠ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে। এই প্রকল্পের অংশীদার হিসেবে যুক্ত রয়েছে ইউসানভার্সিটি কলেজ অব নার্সিং ও ইউনিভার্সিটি কলেজ অব নার্সিং। এছাড়াও, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) – যা ইউরোপ ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতে কর্মী প্রেরণের জন্য গঠিত হয়েছে – যোগ্যতাভিত্তিক অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে এই সংস্থা কাজ শুরু করবে।

সিটি ইউনিভার্সিটি ইয়াম ট্যারি এই প্রকল্পকে অভিহিত করেন “বাংলাদেশের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যসম্পর্কিত প্রতিযোগিতামূলক খাত গড়ে তোলার স্মার্টমডেল” হিসেবে। অপরদিকে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই উদ্যোগকে “প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার একটি টেকসই উন্নয়ন স্তম্ভ রূপে গড়ে তোলার উদ্যোগ” বলে মন্তব্য করেন।

বিশ্বের দক্ষতার ব্যাপক চাহিদা, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, জাপান ও ইউরোপে, বাংলাদেশের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক মানবসম্পদ শিল্প গঠনের সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। ভবিষ্যতমুখী শিল্পমূল্য থাকলেই নার্সিং খাত হতে পারে আমাদের পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সাফল্যের ক্ষেত্র – যেখানে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের পাশাপাশি বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রবৃদ্ধি নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করবে।

এনই

শেয়ার করুনঃ
Advertisement