এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল: মিটফোর্ড ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি

এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল: মিটফোর্ড ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি

The Business Daily

Published : ০২:১৩, ১৫ জুলাই ২০২৫

আপনি যে তথ্যটি শেয়ার করেছেন তা মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ মিছিল এবং সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক দুই বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে তাদের কর্মসূচির বিষয়ে। এই তথ্যটি মূলত ১৪ জুলাই ২০২৫-এর ঘটনার উপর ভিত্তি করে। আমি এ বিষয়ে কিছু অতিরিক্ত তথ্য ও বিশ্লেষণ প্রদান করছি, যা উপলব্ধ সূত্রের উপর ভিত্তি করে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনা এবং সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক দুই বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এই মিছিলের সময় কাছাকাছি একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এনসিপির নেতাকর্মীরা তীব্রভাবে নিন্দা করেন। 

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: এনসিপি নেতাকর্মীরা মনে করেন, মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগের হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক দুরভিসন্ধির অংশ হতে পারে। তারা এটিকে "নব্য ফ্যাসিবাদের" উত্থানের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন এবং সরকারের কাছে এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। বিএসএফের হত্যাকাণ্ড: সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে বিএসএফ কর্তৃক দুই বাংলাদেশি নাগরিকের হত্যার ঘটনাকে তারা ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী অবস্থানের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আগেও জুলাই অভ্যুত্থানকে ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী ও বাংলাদেশপন্থী আন্দোলন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ককটেল বিস্ফোরণ: মিছিলের সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাকে এনসিপি তাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। তারা এই ধরনের হামলার জন্য সরকারের নিরাপত্তা ব্যর্থতার সমালোচনা করেছে এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানিয়েছে। মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে এবং এটি স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। ককটেল বিস্ফোরণের পুনরাবৃত্তি: এনসিপির কার্যালয়ের সামনে এর আগেও একাধিকবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২ জুলাই এবং ৯ জুলাই ২০২৫-এ বাংলামোটরে তাদের কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে, যার প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এই ঘটনাগুলোতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের ঘটনাও রিপোর্ট হয়েছে । অন্যান্য প্রতিবাদ: মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও ১৩ জুলাই শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মশাল মিছিল করেছে। তারা এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক শেল্টারে চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের অংশ হিসেবে দেখছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। 

চাঁদাবাজির অভিযোগ: এনসিপি এবং অন্যান্য সংগঠন মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত করেছে। একটি এক্স পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মহিন জামায়াত-এনসিপির মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে জামায়াত-এনসিপির কর্মীরা প্রাথমিকভাবে বাধা দেয়। তবে এই তথ্য যাচাই করা যায়নি এবং এটি বিতর্কিত হতে পারে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা: এনসিপি এবং অন্যান্য সংগঠনের বিক্ষোভগুলো বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের অভিযোগ তুলছে।

এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড এবং বিএসএফের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জনগণের ক্ষোভের প্রকাশ। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা এই বিক্ষোভকে আরও উত্তপ্ত করেছে এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। তবে এই ঘটনাগুলোর পেছনের প্রকৃত কারণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতে স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন। সরকারের উচিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

BD/S

শেয়ার করুনঃ
Advertisement