‘প্রিটি লিটল বেবি’ খ্যাত গায়িকা কনি ফ্রান্সিস আর নেই

Published : ২২:৪৫, ১৭ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পপ গায়িকা কনি ফ্রান্সিস আর নেই। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ১৬ জুলাই গভীর রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু রন রবার্টস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।গত কয়েক মাস ধরেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন কনি।
চলতি মাসের শুরুতে তিনি নিজেই ফেসবুকে লেখেন যে, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং শরীরে যন্ত্রণা কমাতে চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা চালাচ্ছেন। ৪ জুলাই এক পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, একটি ভালো রাত কাটিয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর ফিরলেন না কনি ফ্রান্সিস।কনি ফ্রান্সিসের পুরো নাম কনসেটা রোজা মারিয়া ফ্র্যাঙ্কোনেরো। ১৯৩৭ সালের ১২ ডিসেম্বর নিউ জার্সির নিউয়ার্কে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শেষ দিকে সংগীতজগতে পা রাখেন কনি। ১৯৫৮ সালে তাঁর গাওয়া ‘হুজ সরি নাউ’ গানটির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান আমেরিকান ব্যান্ডস্ট্যান্ডে গানটি প্রচারিত হওয়ার পরই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। bকনি ফ্রান্সিস যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী পপ তারকা হিসেবে রক অ্যান্ড রোল যুগে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর গাওয়া বিখ্যাত গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘স্টুপিড কিউপিড’, ‘লিপস্টিক অন ইয়োর কলার’, ‘মাই হার্ট হ্যাজ আ মাইন্ড অব ইটস ওউন’ এবং ‘হয়্যার দ্য বয়েজ আর’। সংগীতজগতে তাঁর রেকর্ড বিক্রি ছাড়িয়েছে ২০০ মিলিয়নের বেশি। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিউজিক চার্টে তাঁর ৫০টিরও বেশি গান স্থান পায়। শুধু ইংরেজি নয়, তিনি ইতালিয়ান, জার্মান, স্প্যানিশ, ফরাসি, হিব্রু ও জাপানি ভাষায়ও গান রেকর্ড করেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর জনপ্রিয়তা এতটাই বিস্তৃত ছিল যে, জার্মানি, ইতালি ও জাপানে তাঁর গান কখনো কখনো যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তা পায়।
২০০৯ সালে কনিকে ইতালিয়ান আমেরিকান হল অব ফেমে ‘সেলিব্রিটি ইনডাক্টি’ হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী পুরুষপ্রধান সংগীতজগতে নারীদের জন্য যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা কনি ফ্রান্সিস সাহসিকতার সঙ্গে অতিক্রম করেছেন। তাঁর গান ও সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি নারীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। সম্প্রতি তাঁর গাওয়া ‘প্রিটি লিটল বেবি’ গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে জনপ্রিয়তা পায়। ইনস্টাগ্রামে অসংখ্য কনটেন্ট নির্মাতা গানটি ব্যবহার করছেন।
গানটি প্রকাশের ৬৩ বছর পরও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছে, যা প্রমাণ করে যে কনির সংগীত এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। সংগীতজগতে কনি ফ্রান্সিসের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর গান যুগের পর যুগ ধরে মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে এবং কণ্ঠের সুরে এনে দিয়েছে সান্ত্বনা ও প্রেরণা। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের পপ আইকন, যার স্মৃতি তাঁর গান ও ভক্তদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
BD/S