ডিসি-এসপিদের রদবদলে লটারির ভাবনা, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন চান প্রধান

Published : ০১:২১, ১০ জুলাই ২০২৫
নির্বাচন ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলেই, ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রস্তুতি শেষের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ডিসেম্বরের মধ্যে সব আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ নিরাপত্তা খাতের শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল মাসে। সে লক্ষ্যে নির্বাচন-সম্পর্কিত কাঠামোগত প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করার কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে আলোচনায় আসে, নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের রদবদলের বিষয়টি। এই বদলি যাতে নিরপেক্ষভাবে হয়, সেজন্য লটারির মাধ্যমে নিয়োগ বা বদলির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ভোট সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অভাব দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবারের নির্বাচনে আট লাখের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাদের সবাইকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। একই সঙ্গে ১৭ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পূর্ববর্তী নির্বাচনে অনিয়মের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এবার চার দিনের বদলে সাতদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। ভোটের দিন এক থানার পুলিশকে অন্য থানায় দায়িত্ব দিয়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের কথাও বিবেচনায় আনা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নতুন ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন। ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের জন্য পৃথক ভোটার তালিকা এবং বুথের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা পুনর্বহালের বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে বড় ধরনের অনিয়ম হলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা কমিশনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার আইনি দিকগুলো বিবেচনায় আনার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনী থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। বর্তমানে সেনাবাহিনী যেভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে আছে, তা নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, নির্বাচনের সময় যেন কোনো পক্ষপাতিত্ব না ঘটে। অপরাধ দমনে আরও সক্রিয় হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।