দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার পর দলটির সব পদ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবীর শাহীন।
সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবের কাছে পাঠানো একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তিনি তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রকাশ্যে বিএনপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। লিখিত আবেদনে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সব দায়িত্ব থেকে নিজেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা স্পষ্ট করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শাহ নুরুল কবীর শাহীন ১৯৯৬ সালে ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
টানা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দলের বিভিন্ন স্তরে কাজ করে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। রাজনীতির বাইরে জাতীয় পর্যায়েও তার সক্রিয়তা ছিল। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
পদত্যাগপত্রে শাহ নুরুল কবীর শাহীন বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দেশের বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, তার পদত্যাগপত্রের অনুলিপি বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত কারণেই তিনি দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এবং তার পদত্যাগপত্র ডাকযোগে দলীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফুল্লাহেল মাজেদ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়ন না পাওয়ায় শাহ নুরুল কবীর শাহীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে গত ১৮ ডিসেম্বর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
দীর্ঘদিনের এই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার পদত্যাগের ঘটনায় ঈশ্বরগঞ্জসহ ময়মনসিংহ-৮ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা, জল্পনা ও নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
