গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই মাসের পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি নিউটন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার বাদী গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমদ বিশ্বাস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান। পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নের খাটিয়াগড় চরপাড়া এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়।
এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই ঘটনায় গত বুধবার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত যৌথ বাহিনী মোট ৪৫ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে বুধবার রাতে ১৪ জনকে আটক করে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। গোপালগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার ১৬ জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে ১২ জনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয় এবং আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এই সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাতেই পুরো গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ আংশিকভাবে শিথিল করা হয়।
সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হয়। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গোপালগঞ্জে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন। ঘটনার তদন্ত ও নিরাপত্তা জোরদারে প্রশাসন ও যৌথ বাহিনী মাঠে তৎপর রয়েছে।