বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের এমডি গ্রেফতার, ৩৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সিআইডির অভিযান

বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের এমডি গ্রেফতার, ৩৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সিআইডির অভিযান

The Business Daily

Published : ১১:৫৬, ১ আগস্ট ২০২৫

অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের করপোরেট গ্যারান্টি-প্রাপ্ত সহযোগী প্রতিষ্ঠান অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার ওয়াসিউর রহমানকে  গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার সিআইডির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সিআইডি জানায়, ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের তত্ত্বাবধানে, ইনস্পেকটর মো. ছায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে রাজধানীর মধ্যবাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা থেকে ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

রপ্তানি আয়ের অর্থ ফেরত না আনার অভিযোগ সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের দিলকুশা লোকাল অফিস থেকে অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড তিনটি এলসি (সেলস কন্ট্রাক্ট) গ্রহণ করে এবং ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এসব চুক্তির আওতায় পণ্য রপ্তানি করে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, রপ্তানির চার মাসের মধ্যে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা আনেনি। তদন্তে উঠে আসে, প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে রপ্তানি আয়ের টাকা দেশে না এনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় অর্থপাচারে জড়িত হয়েছে। অভিযুক্ত ওয়াসিউর রহমান এই কর্মকাণ্ডে মূল নেতৃত্বে ছিলেন এবং অন্যান্য এজাহারভুক্ত আসামিদের সঙ্গে মিলে পরিকল্পিতভাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আদালতে সোপর্দ ও অনুসন্ধান অব্যাহত সিআইডি জানায়, গ্রেফতার ওয়াসিউর রহমানকে আদালতে সোপর্দ করে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি তার ও তার সহযোগীদের বিদেশে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।বেক্সিমকো গ্রুপের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত এছাড়া সিআইডি জানিয়েছে, বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান, এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে। তিনি এই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের করপোরেট গ্যারান্টির বিষয়ে কীভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন—তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই অর্থপাচারের অভিযোগ দেশীয় অর্থনীতিতে আস্থা সংকট তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিআইডির তদন্ত এবং পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপগুলোকে কেন্দ্র করে এখন দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বেক্সিমকো গ্রুপ ও সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যক্তিদের ভূমিকার দিকে।

শেয়ার করুনঃ
Advertisement