প্রিজন সেল থেকে আসামির পলায়ন

Published : ১৭:২১, ৭ আগস্ট ২০২৫
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম ইউসুফ হাওলাদার (২৩)। তিনি খুলনা নগরীর খালিশপুর থানার আলমনগর মোড়ের বাসিন্দা এবং শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে আলমনগর মোড় থেকে ২০ পিস ইয়াবাসহ ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে খালিশপুর থানা পুলিশ। রাতে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। রাতেই ইউসুফ বুকে ব্যথার অভিযোগ করলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। খালিশপুর থানার এএসআই মো. নাসির উদ্দিন বলেন, “চিকিৎসক তার কোনো নির্দিষ্ট রোগ শনাক্ত করতে পারেননি। ইউসুফ একেক সময় একেক রকম কথা বলছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে নয়টায় তাকে প্রিজন সেলে রেখে আমি জিডি করে চলে আসি।” রাত সাড়ে ৩টায়, প্রিজন সেলের আরেক বয়স্ক আসামি বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন জানালে দায়িত্বরত কনস্টেবল রাব্বি আলী সেলের তালা খুলে তাকে বাইরে নিয়ে যান। প্রিজন সেলের ইনচার্জ এসআই শামীম রেজা জানান, “বাথরুম শেষে ফিরে আসার পর দেখা যায় ইউসুফ সেলে নেই। তদন্তে জানা গেছে, ওই কনস্টেবল ভুল করে সেলের তালা আবার বন্ধ করেননি।” এ ছাড়া বাইরে থাকা কারারক্ষীদের ফটকের তালাও খোলা ছিল, ফলে ইউসুফ নির্বিঘ্নে হাসপাতাল ত্যাগ করতে সক্ষম হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আবু তালেব বলেন, “প্রিজন সেলের ভেতরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। আর বাইরের প্রধান গেটের নিরাপত্তার দায়িত্ব কারারক্ষীদের। দুই পক্ষেরই গাফিলতি ছিল। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—একজন মাদক মামলার আসামি কীভাবে পুলিশি হেফাজত থেকে রাতের আঁধারে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলো? হাসপাতালে থাকা অবস্থায় একজন আসামির প্রিজন সেল থেকে পালানো কেবল দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নয়, এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জনআস্থার বড় আঘাত বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফকে ধরতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকায়ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইউসুফের কোনো সন্ধান মেলেনি।