৪০০ বছরের চাপ, তীব্র ঝুঁকিতে দুই জেলা

৪০০ বছরের চাপ, তীব্র ঝুঁকিতে দুই জেলা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:৪৮, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের নিচে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা—এই তিনটি টেকটোনিক প্লেটের ক্রমাগত সরে যাওয়ার ফলে দেশের ভূ-গঠন দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এই নড়াচড়ার প্রভাবেই ডাউকি, মধুপুর ও সিলেট লাইনমেন্টসহ কয়েকটি সক্রিয় ফল্ট লাইন গড়ে উঠেছে। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসবের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও বড় ভূমিকম্পের সম্ভাব্য উৎস হলো মধুপুর ফল্ট।

গবেষণা বলছে, প্রায় চার শতাব্দী ধরে মধুপুর ফল্টে বিপুল পরিমাণ চাপ জমে আছে। এই চাপ কোনো সময় হঠাৎ মুক্তি পেলে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ পর্যন্তও ছুঁতে পারে। রাজধানী ঢাকা মধুপুর ফল্টের মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করায় ঝুঁকির মাত্রা আরও বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পেও ঢাকার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২০০৭ সালে মধুপুর ফল্টের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য এলাকায় একটি সিসমোগ্রাফ স্থাপন করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই যন্ত্রটি কোথায় আছে, তার কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। ফলে মধুপুর গড় ও আশপাশের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নরসিংদী কেন্দ্রিক ভূমিকম্পে সারাদেশ কেঁপে ওঠার পর মধুপুর অঞ্চলে মানুষের উদ্বেগ অনেক বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, টাঙ্গাইলকে বহু আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হলেও ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বা সতর্কতার পর্যাপ্ত তথ্য তারা পান না, যা তাদের প্রস্তুতিহীন অবস্থায় ফেলে দেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন জানান, এলাকাবাসীর সচেতনতা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁর মতে, পরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ এবং যথাযথ তদারকি থাকলে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই সীমিত রাখা সম্ভব।

এমবিএসটিইউ-এর পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা গেলে মধুপুর এলাকার ভূমিকম্প-ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যেতে পারে। ইতোমধ্যে নতুন ডিভাইস সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের এক ভূমিকম্পে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের বোকারবাইদ গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে বড় ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেই ফাটলের ব্যাস ছিল ৫–৬ ইঞ্চি এবং গভীরতা প্রায় ২৫–২৬ ফুট।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement