শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি আরিফ ভারতে আটক

Published : ১৮:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৫
ভারতে পালিয়েও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাননি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আরিফুজ্জামান আরিফ। সীমান্ত অতিক্রমের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। তবে কীভাবে তাকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ। জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় ৩টি হত্যা ও ২টি হত্যাচেষ্টা মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন আরিফুজ্জামান। উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্টে বিএসএফ তাকে আটক করে। পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হয় যে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তা। বর্তমানে তাকে ভারতের স্বরূপনগর থানায় রাখা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টার্স) হাবিবুর রহমান জানান, নীলফামারীর বাসিন্দা আরিফুজ্জামানকে গত বছরের ৫ আগস্ট রংপুর থেকে বদলি করে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এপিবিএনে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। একই বছরের ১৪ আগস্ট বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ওই মামলায় চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে, যেখানে ৬ জন গ্রেপ্তার হলেও আরিফ পলাতক ছিলেন। এছাড়া তাজহাট থানায় আবু সাঈদ হত্যা মামলা, কোতোয়ালি থানায় কলা ব্যবসায়ী শহীদ মেরাজুল ইসলাম হত্যা মামলা, সবজি ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলা, কলেজ শিক্ষার্থী জিম হত্যাচেষ্টা মামলা ও পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী হত্যাচেষ্টা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি তিনি।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেছিলেন আরিফুজ্জামান। ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়মুখী ছাত্র মিছিলে ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে পুলিশি হামলার নেতৃত্ব দেন তিনি। তখন শহীদ আবু সাঈদকে গুলি করার আগেও-পরে আরিফ কাছ থেকে নির্দেশ দেন এবং নিজেও গুলি চালান।
দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মজিদ আলী বলেন, যেহেতু অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতে ধরা পড়েছেন, আগে দেখতে হবে সেখানকার মামলা প্রক্রিয়া কী হয়। এরপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত আসবে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় নথি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কলা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যার ঘটনায় বাদীর কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা করিয়ে নাম কেটে দেন আরিফ। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় আহত শিক্ষার্থী মাহদি হাসান অনিক জানান, এএসপি আরিফ প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যন্ত আগ্রাসী ভূমিকা নেন।
BD/AN