রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুধু বাংলাদেশের নয়, মিয়ানমারের আস্থার ওপরও নির্ভরশীল

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুধু বাংলাদেশের নয়, মিয়ানমারের আস্থার ওপরও নির্ভরশীল

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:৫৩, ২৪ আগস্ট ২০২৫

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আয়োজিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডার সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশগুলো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানাবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম।

রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই সংলাপ মূলত সেপ্টেম্বরের সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সরাসরি অংশ নিয়ে নিজেদের আশা, হতাশা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার কথা জানাচ্ছেন। এসব মতামত নিউইয়র্ক সম্মেলনের আলোচনায় প্রতিফলিত হবে।

তিনি আরও বলেন, সংলাপের কাঠামো চারটি মূল থিমের ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে— মানবিক সহায়তা ও চলমান অর্থসংকট মোকাবিলা, রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রত্যাবাসনের আস্থা তৈরির উদ্যোগ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই সমাধানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।

সংলাপ শেষে একটি ‘চেয়ার’স সামারি’ তৈরি হবে, যাতে আলোচনার সারসংক্ষেপ ও সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই নথি নিউইয়র্ক সম্মেলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স ডকুমেন্ট হিসেবে কাজ করবে।

মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সহায়তা না পেলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। তাই নতুন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে এটি কেবল বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করছে না, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও আস্থার ওপরও নির্ভরশীল।

তার মতে, রোহিঙ্গা সংকট এখন শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।

কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়াচে আয়োজিত “স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন” শীর্ষক এ সংলাপে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক সংস্থার প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তখন থেকেই বাংলাদেশ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement