ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগ, প্রেমিক খুন ও দেহ খণ্ডন

Published : ১৪:৪৮, ৩১ আগস্ট ২০২৫
স্বামী জাকির হোসেন যখন বাইরে ছিলেন, তখনই আর্জিনা বিবি ঘরে ডেকে আনেন তার ‘প্রেমিক’ আব্দুল হাসানকে। প্রেমিক ও প্রেমিকা যখন ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ছিলেন, ঠিক তখনই বাড়িতে প্রবেশ করেন জাকির। এক ঝটকায় তিনি প্রেমিককে সরিয়ে দেন এবং নিজের কাছে নিয়ে এসে আর্জিনা অভিযোগ করেন, হাসান তাকে একা ঘরে ধর্ষণ করতে ঢুকে পড়েছিল।
এই অভিযোগ শুনে প্রেমিক তাজ্জব ও স্তম্ভিত হয়ে যান। ঘটনাস্থলে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় তীব্র বাগবিতণ্ডা। ক্রোধে ধুয়ে জাকির হাসানের গলা চেপে তাকে হত্যা করে। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য স্ত্রী আর্জিনার সহযোগিতায় জাকির মৃতদেহকে খণ্ড-বিখণ্ড করতে বসেন।
প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সদ্য নিহত হাসানের দুটি পা কেটে ফেলা হয়। এরপর মৃতদেহ থেকে আলাদা করা হয় মাথা। খণ্ডিত দেহাংশ নদী ও খালের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। কাটা মাথাটি জাকির নিজস্ব ‘গোপন আস্তানায়’ লুকিয়ে রাখেন।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয় ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার রোহন্ডা-চণ্ডীগড় গ্রামে। ঘটনার সাত বছর পর, অবশেষে দম্পতি জাকির ও আর্জিনা আইনের আওতায় আনা হলো। আদালতের রায় অনুযায়ী, স্বামী জাকিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে স্ত্রী আর্জিনাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের রাতেই নিহতের পরিবার মধ্যমগ্রাম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। পরদিন, ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর, নোয়াই খালে হাসানের দেহ ভেসে ওঠে। পুলিশের তদন্তে দম্পতি আর্জিনা ও জাকিরকে আটক করা হয়। আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করেন।
মামলার সময় মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বারাসত জেলা আদালত জাকির ও আর্জিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে। শুক্রবার আদালত জাকিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০০০ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছরের কারাভোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর্জিনাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০০০ টাকা জরিমানা করা হয়, যা অনাদায়ে এক মাসের কারাভোগের সঙ্গে যুক্ত হবে।
BD/AN