প্রচলিত স্টেথোস্কোপে যুগান্তকারী পরিবর্তন, হার্টের অসুখ ধরবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

Published : ১২:৩৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্টেথোস্কোপ—ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা-যন্ত্র। ১৮১৬ সালে আবিষ্কারের পর থেকে দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে মূলত রক্তচাপ মাপা ও প্রাথমিক শারীরিক সমস্যার প্রাথমিক নির্ণয়ে।
তবে সময় বদলেছে, বদলে যাচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞানও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আজ এমন এক যুগের সূচনা করেছে, যেখানে সাধারণ স্টেথোস্কোপও বৈপ্লবিক রূপ নিচ্ছে। ব্রিটিশ গবেষকদের দাবি, তারা তৈরি করেছেন এক অভিনব এআই-সমৃদ্ধ স্টেথোস্কোপ, যা শনাক্ত করতে সক্ষম জটিল হৃদরোগও।
এই নতুন প্রজন্মের স্টেথোস্কোপে প্রচলিত ধাতব চেস্টপিসের জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে তাসের মতো আকারের একটি ছোট ডিভাইস। এতে থাকা বিশেষ মাইক্রোফোন হৃদস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহের সূক্ষ্ম পার্থক্য ধরতে পারে, যা মানুষের কানে ধরা পড়ে না। যন্ত্রটি একসঙ্গে ইসিজিও রেকর্ড করে এবং সেই তথ্য সরাসরি ক্লাউডে পাঠায়। পরে এআই সিস্টেম হাজার হাজার রোগীর ডেটা বিশ্লেষণ করে দ্রুত ফলাফল দেয়।
গবেষকদের মতে, মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই এই এআই স্টেথোস্কোপ শনাক্ত করতে পারে তিন ধরনের গুরুতর হৃদরোগ—
হার্ট ফেলিওর (Heart Failure)
হার্ট ভালভের সমস্যা (Heart Valve Disease)
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন (Abnormal Heart Rhythms)
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও এনএইচএসের যৌথ উদ্যোগে চালানো গবেষণায় ৯৬টি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রায় ১২ হাজার রোগীর ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে এই যন্ত্র দিয়ে। ফলাফলে পাওয়া গেছে—
হার্ট ফেলিওর শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে প্রায় ২.৩৩ গুণ।
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেড়েছে ৩.৫ গুণ।
হার্ট ভালভের রোগ শনাক্ত হওয়ার হার বেড়েছে ১.৯ গুণ।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও খ্যাতনামা কার্ডিওলজিস্ট ড. সোনিয়া বাবু-নারায়ণ বলেন, “২০০ বছর আগে আবিষ্কৃত স্টেথোস্কোপ আজ ২১ শতকের প্রযুক্তির কল্যাণে নতুন রূপ নিচ্ছে। এ ধরনের উদ্ভাবন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক সময় রোগ ধরা পড়ে কেবল তখনই যখন রোগী জীবন-মৃত্যুর সংকটে হাসপাতালে পৌঁছান।”
তিনি আরও বলেন, “আগেভাগে রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়। এতে রোগীরা দীর্ঘ সময় সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।”
BD/AN