বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে দূতাবাসটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতার কথা জানানো হয়।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে যে তরুণ রাজনৈতিক নেতা শরীফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তার জানাজা আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর, আনুমানিক দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ উপলক্ষে ওই এলাকায় এবং ঢাকার বিভিন্ন অংশে তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে দূতাবাস বলেছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত সমাবেশও কখনো কখনো হঠাৎ সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। তাই বিক্ষোভ ও বড় জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা এবং এমন স্থানের আশপাশে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে, গুলিবিদ্ধ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি মারা যান। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছাবে এবং পরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার সময় গত ২০ ডিসেম্বর দুপুরে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। মাথায় গুলি লাগায় তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা চললেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি এবং বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় ফয়সাল করিম মাসুদ নামে একজনকে প্রধান হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চালক ছিলেন আলমগীর শেখ। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে।
প্রসঙ্গত, গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রায় এক মাস আগেই হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। গত নভেম্বরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোন ও বার্তার মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। একই পোস্টে তিনি লেখেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা তাকে নিয়মিত নজরদারিতে রাখছে। তবে জীবননাশের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও তিনি ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।



























