এক হাতে ব্যাট ধরেও লড়াই: তামিম-ওকস থেকে মার্শাল পর্যন্ত

এক হাতে ব্যাট ধরেও লড়াই: তামিম-ওকস থেকে মার্শাল পর্যন্ত

The Business Daily

Published : ২১:৪৭, ৪ আগস্ট ২০২৫

ক্রিকেট কেবল স্কোরবোর্ডের খেলা নয়, এর ভেতরে লুকিয়ে থাকে অদম্য সাহস, দলীয় আত্মত্যাগ এবং ক্রিকেটারদের মানবিকতা। ইতিহাসে এমন অনেক মূহূর্ত আছে, যেখানে ক্রিকেটাররা গুরুতর আহত অবস্থাতেও দলের প্রয়োজনে এক হাতে ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছেন। বাংলাদেশি তারকা তামিম ইকবাল এবং ইংলিশ অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস এমন বীরত্বের নজির স্থাপন করেছেন ভিন্ন সময়ে।তামিম ইকবাল – ২০১৮ এশিয়া কাপ ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাঁ হাতের কব্জিতে চোট পান তামিম ইকবাল। সবাই ভেবেছিল তাঁর টুর্নামেন্ট শেষ। কিন্তু দলের প্রয়োজনে ১১ নম্বরে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তিনি। তখন মুস্তাফিজুর রহমান আউট হওয়ার অপেক্ষায়, দলের স্কোর দাঁড়িয়েছিল ২২৯/৯। অন্যপ্রান্তে ব্যাট করছিলেন মুশফিকুর রহিম।

তামিম মাঠে নামলেন বাঁ হাত ভাঙা, এক হাতে ব্যাট ধরে। সে সময় তামিম-মুশফিক জুটিতে আসে ৩২ রান, যা ম্যাচের গতিপথই পাল্টে দেয়। বাংলাদেশ জেতে ১৩৭ রানে।  ক্রিস ওকস – ২০২৫ ওভাল টেস্ট আজ সোমবার ওভালে ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস টেস্ট ম্যাচে, জয় থেকে মাত্র ১৭ রান দূরে থাকলেও হাতে ছিল কেবল ১ উইকেট। ঠিক তখনই এক হাতে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন ক্রিস ওকস। একটি মারাত্মক কাঁধের চোটের কারণে তার ডান হাত জার্সির ভেতরে গুটানো ছিল। অসহায় সেই দৃশ্য দেখে অনেক সমর্থক কেঁদে ফেলেন। ওকসের সঙ্গে ছিলেন গাস এটকিনসন, যিনি নন-স্ট্রাইকে বারবার ওকসকে স্ট্রাইক বাঁচিয়ে চেষ্টা করছিলেন।

কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মোহাম্মদ সিরাজ ওকসকে বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করে দেন। ইংল্যান্ড হেরে যায় ৬ রানে।  ম্যালকম মার্শাল – ১৯৮৪, হেডিংলি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার ম্যালকম মার্শালের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল ভেঙে যায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে। তারপরও তৃতীয় দিন ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তিনি। যে সময় ল্যারি গোমেজ ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন এবং দলের আর কোনো ব্যাটার ছিল না, তখন মার্শাল মাঠে নামেন শুধুমাত্র গোমেজের সেঞ্চুরির জন্য। ব্যাট করেন এক হাতে। এই মানবিক সাহসিকতা তাঁকে কিংবদন্তি করে তোলে। 

 সেলিম মালিক – ১৯৮৬, ফয়সালাবাদ পাকিস্তানের সেলিম মালিকও এক হাতে ব্যাটিংয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ১৯৮৬ সালে ফয়সালাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলায় তার বাঁ হাত প্লাস্টারে মোড়ানো ছিল। সেই অবস্থাতেই দলের প্রয়োজনে শেষ ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।  গ্রায়েম স্মিথ – ২০০৯, সিডনি টেস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ ভাঙা হাতে ২০০৯ সালে সিডনি টেস্টে মাঠে নামেন। দক্ষিণ আফ্রিকার তখন পরাজয় নিশ্চিত। শেষ ইনিংসে মাত্র ৮.২ ওভার টিকে থাকলেই ম্যাচ ড্র। স্মিথ ব্যথা উপেক্ষা করে মিচেল জনসন ও ডগ বলিঞ্জারের বোলিং সামলাতে থাকেন এক হাতে। শেষপর্যন্ত ম্যাচের শেষ ওভারে তিনি বোল্ড হন, কিন্তু তার লড়াই আজও ক্রিকেটবিশ্বে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।

S

শেয়ার করুনঃ
Advertisement