ফিলিস্তিনের দাবি: আল-আকসাকে ইহুদিকরণের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে

Published : ১৭:২২, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফিলিস্তিনি প্রশাসনের অভিযোগ, দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদের নিচে ইসরায়েল গোপনে খনন চালাচ্ছে এবং প্রাচীন ইসলামী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করছে। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপ শহরের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পরিচয় মুছে ফেলার প্রচেষ্টা এবং আল-আকসাকে ইহুদিকরণের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আল-আকসার নিচে ইসরায়েলের অবৈধ খননকাজের ভিডিও ফাঁস হয়েছে। জেরুজালেম গভর্নরেট জানায়, ইসরায়েল উমাইয়া যুগের নিদর্শন ধ্বংস করছে, যা মুসলমানদের ন্যায্য মালিকানার প্রমাণ বহন করে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এসব খননের মাধ্যমে ‘টেম্পল মাউন্ট’ তত্ত্ব আরও জোরালো করা এবং ইসলামী ঐতিহ্যের পরিচয় মুছে ফেলার পরিকল্পনা চলছে।
গভর্নরেট সতর্ক করে জানায়, আন্তর্জাতিক তদারকি এড়িয়ে গোপনে চালানো এসব খনন মসজিদের ভিত্তি ও ঐতিহাসিক স্থাপনার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে। তাদের অভিযোগ, পূর্ব জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের পরিকল্পনায় ইসরায়েল নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দিতে চাইছে।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মহল, জাতিসংঘ ও ইউনেস্কোর অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি জানায় গভর্নরেট। তারা দখলদার ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বানও জানায়।
যদিও ফিলিস্তিনিরা নির্দিষ্ট খননস্থলের তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে বহু বছর ধরে ইসরায়েল আল-আকসার নিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে আসছে। ফিলিস্তিনিদের মতে, এ কার্যক্রম পূর্ব জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।
আন্তর্জাতিক আইনে আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধানের একমাত্র দায়িত্ব জর্ডান-পরিচালিত জেরুজালেম এনডাওমেন্ট কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত।
২০১৩ সালের মার্চে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের পবিত্র স্থানের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব জর্ডানকে দেওয়া হয়।
আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে বিশ্বের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত। ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে আখ্যায়িত করে এবং দাবি করে, এখানেই তাদের প্রাচীন দুটি মন্দির ছিল। ১৯৬৭ সালের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়।
পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে তারা পুরো শহরটি নিজেদের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেয়, যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সিদ্ধান্ত কখনো স্বীকৃতি দেয়নি।
BD/AN