গাজায় হামলায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জীবন ঝুঁকিতে

Published : ১৮:১৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাজায় চলমান ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মধ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের যত্ন নেওয়া দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
দেইর আল-বালাহ এলাকার বাসিন্দা আবীর হাসান তাঁর অটিস্টিক ছেলে আবদাল্লাহকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে লড়ছেন। তিনি জানান, লাগাতার বোমা বিস্ফোরণ আবদাল্লাহকে ভয় পাইয়ে দেয়।
আবীর বলেন, প্রথমে তাঁরা আমীরা নামের একটি বাস্তুচ্যুত ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে যান। কিন্তু সেটি ভর্তি থাকায় তাঁরা তাঁবুর জায়গাও পাননি।
“পরে আমাদের বলা হয় সালাহউদ্দিন স্ট্রিটের কাছে চলে যেতে, যদিও জায়গাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমার মেয়েরা কাঁদছিল আর আবদাল্লাহ অস্বাভাবিক শব্দ করতে শুরু করে। প্রচণ্ড গরম, আমরা জানি না কোথায় যাব,” বলেন তিনি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করার পর একাধিকবার জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বাসিন্দাদের দক্ষিণের আল-মাওয়াসি এলাকায় যেতে বলা হয়, যেটিকে তথাকথিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলা হলেও সেখানেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। ফলে গাজা সিটি ছেড়ে দক্ষিণের অজানা গন্তব্যে পলায়নরত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা বাড়ছে।
আবদাল্লাহর জন্য এই অবিরাম সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা আর বোমার শব্দ মানে হলো রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। নতুন অভ্যাস হিসেবে সে নিজের চুল টেনে ছিঁড়তে শুরু করেছে। এ কারণে পরিবারটি তাঁর চুল ছোট করে দিয়েছে।
আবীর বলেন, “আমি আবারও ডাক্তারি পরামর্শে দেওয়া ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো শুরু করেছি, যেন সে রোদের মধ্যে বাইরে না যায়। অন্য কোনো উপায় নেই। আমরা যেদিন ঘর ছাড়লাম, তার দু’দিন আগে আমার ফোন ভেঙে যায়। সেটিই ছিল আবদাল্লাহকে শান্ত রাখার একমাত্র উপায়—মোবাইল গেম আর ভিডিও দেখিয়ে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই প্রচণ্ড মানসিক চাপে আছি—ছোট বড় সবাই। একসময় আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি, যেন আমাদের জীবন একসঙ্গে নিয়ে নেন, যাতে আবদাল্লাহ একা না থাকে। এখানে তাঁর প্রয়োজনীয় সবকিছু নেই।”
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় দুই বছরের তীব্র হামলায় ইসরায়েলি অভিযানে অন্তত ৬৬ হাজার ৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৬২ জন।
সুত্র : আল-জাজিরা
বিডি/এএন