গণমানুষের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত থামবে না: ডা. শফিকুর রহমান

Published : ২৩:৩৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
‘জামায়াত জনগণের মুক্তি এবং বৈষম্যহীন-ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে; তাই গণমানুষের পরিপূর্ণ মুক্তির আগ পর্যন্ত আমরা কোনভাবেই থামবো না; আমাদের কেউ থামাতে পারবে না’ বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় ইব্রাহিমপুর আশিদাগ রোডের একটি মিলনায়তনে কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কাফরুল দক্ষিণ থানার আমীর উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. আবু নাহিদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর mমোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীরআব্দুর রহমান মূসা।
উপস্থিত ছিলেন মিরপুর পুর্ব থানা আমীর শাহ আলম তুহিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শহীদুল্লাহ, কাফরুল উত্তর থানা আমীর রেজাউল করিম মাহমুদ ও কাফরুল জোন সদস্য জসিম উদ্দিন, শিবিরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিম শাখার সভাপতি রেজাউল করিম ও সেক্রেটারি শান্ত আহমেদ, আতিক হাসান, কাফরুল থানা সভাপতি নাইমুর রশিদ, ডা. আসাদুজ্জামন কাবুল খাইরুল ইসলাম নবিন ও কাফরুল জোন সদস্য জসিম উদ্দিন প্রমূখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলোর উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই বিগত ৫৪ বছরে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি বরং দেশের দুর্নীতি পরিস্থিতি এখন পর্বত প্রমাণ হয়ে উঠেছে। অথচ আল্লাহর ২ বান্দা ছিলেন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা ৩ টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও তাদের বিরুদ্ধে ১ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কেউ তুলতে পারে নি।
কারণ, তারা আল্লাহকে ভয় করতেন। আর তাদের এ দায়িত্ব ছিলো আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। তাই তারা আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের জীবন-সম্পদ রক্ষায় সাধ্যমত চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। অথচ জুলুমবাজ সরকার পাতানো ও সাজানো বিচারের নামে প্রসহন করে তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে’।
তিনি শহীদ নেতৃবৃন্দের চেতনা ও প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সকলকে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান। তিনি জামায়াতের ক্রমবর্ধমান গণভিত্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, সাড়ে ৩ কোটিরও অধিক মানুষ জামায়াতের আদর্শ ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমরা এ বিশাল জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে চাঁদাবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। আমরা লোক দেখানো শাস্তিতে বিশ্বাস করি না বরং কারো বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতে আমরা কসুর করবো না’।
তিনি দেশকে দুর্নীতি ও অপরাধ মুক্ত করতে আগামী নির্বাচনে দাঁড়ি পাল্লার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি আহবান জানান। আমীরে জামায়াত বলেন, ‘আমরা দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, দুর্নীতিমুক্ত করতে পুরোপুরি আপোষহীন। আগামী নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমরা ৩ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রথমত, আমরা ঘুঁণে ধরা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থাকে গণমুখী ও জীবনধর্মী করে ঢেলে সাজাবো। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, আমরা দেশ থেকে দুর্নীতি শেকড়ের মুলোৎপাটন করবো, তৃতীয়ত, আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করবো যে সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত-পথ নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে’। তিনি সে প্রতিশ্রূত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে আপোষহীন থাকার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের দেশের বড় সমস্যারগুলোর একটি। তাই সবার আগে দেশকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজী ও লুটপাট মুক্ত করতে হবে। জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করবো সে সমাজে কেউ অপরাধ করার সাহস পাবে না’। তিনি সে কাক্সিক্ষত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
বিডি/এএন