রংপুরে বিভাগে ৫৩৪৮টি মণ্ডপে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ৪৬৬৯৬ জন আনসার-ভিডিপি

Published : ২০:০৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শরতের শুভ্রতায় কাশফুলের দোলায় ঢাকঢোল, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত দেবী দুর্গার আগমন। মণ্ডপে মণ্ডপে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কেন্দ্র করে মণ্ডপে মণ্ডপে মহোৎসব।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী এই মহোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী রংপুর রেঞ্জ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৯ দিন রংপুর রেঞ্জের আট জেলায় ৪৬ হাজার ৬৯৮ জন প্রশিক্ষিত আনসার-ভিডিপি সদস্য শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে দায়িত্ব পালন করবেন। রংপুর বিভাগের পাঁচ হাজার ৩৪৮টি পূজামণ্ডপে আনসার-ভিডিপি সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন।
আনসার ও ভিডিপি রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল আউয়ালের নির্দেশনায় বিভাগের জেলা কমান্ড্যান্টরা পূজামণ্ডপগুলোর ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী সদস্যদের বাছাই করে দায়িত্ব বণ্টন করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে আটজন, কম ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে ছয়জন এবং সাধারণ মণ্ডপে ছয়জন আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
রংপুরের ৯১২টি মণ্ডপে সাত হাজার ৬৪৮ জন, কুড়িগ্রামের ৫২৫টি মণ্ডপে চার হাজার ৬৪৪ জন, লালমনিরহাটের ৪৬৮টি মণ্ডপে চার হাজার ২৩৬ জন, গাইবান্ধার ৫৭৭টি মণ্ডপে চার হাজার ৯৪৮ জন, নীলফামারীর ৮৪১টি মণ্ডপে সাত হাজার ৪২ জন, দিনাজপুরের ১ হাজার ২৫৯টি মণ্ডপে ১১ হাজার ৫৬ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৪৬৮টি মণ্ডপে চার হাজার ৪৩৬ জন ও পঞ্চগড়ের ২৯৮টি মণ্ডপে দুই হাজার ৬৮৮ জন আনসার-ভিডিপি দায়িত্ব পালন করছেন।
উপমহাপরিচালক আবদুল আউয়াল শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঝে ব্রিফিং প্রদান করেন। তিনি বলেন, পূজামণ্ডপের দায়িত্ব পালনকালে করণীয় সম্পর্কে সদস্যদের নিয়োগপূর্ব দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সু-শৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে পূজামণ্ডপে চলাচল, গমনাগমন ও পরিদর্শনে সার্বক্ষণিকভাবে আনসার-ভিডিপি সদস্যরা দর্শনার্থীদের সহায়তা করবেন। জরুরি মুহূর্তে ব্যাটালিয়ন আনসারগণ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্বপালনকালে কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে ডিউটি পরিদর্শন ও তদারকি করবেন।
দুর্গোৎসবে মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়া দশমী যথাযথ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হবে। এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে (হাতি) এবং প্রস্থান হবে দোলায় (পালকি)। শাস্ত্রমতে, গজে আগমন শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলার প্রতীক। তবে দোলায় প্রস্থানকে অশুভ ধরা হয়, যা মহামারি বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে।
শাস্ত্রকারদের ব্যাখ্যা অনুসারে, দুর্গা ভক্তদের সব ধরনের বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা ও যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেন। ‘মহাচণ্ডী’তে উল্লেখ রয়েছে যে, ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শক্তি বৃদ্ধির আশায় শরৎকালে মহামায়ার পূজা করেছিলেন, যার ফলে তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। সেই থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর শরৎকালে দুর্গাপূজা পালন করে আসছেন।
বিডি/এএন