শিশুদের জন্য ৩টি ফলের রসের উপকারিতা

Published : ১২:৩২, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
অনেক বাবা-মা মনে করেন, সন্তান ঠিকমতো খাচ্ছে না বলেই তার উচ্চতা বাড়ছে না। কিন্তু সত্য হলো—শুধু খাবারের পরিমাণ নয়, কী ধরনের খাবার খাওয়া হচ্ছে সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি এবং উচ্চতা বাড়ানোর জন্য দরকার প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাবার।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিছু ফলের রসে এমন প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকে যা হাড় মজবুত করে, হজমশক্তি উন্নত করে এবং শরীরের গ্রোথ হরমোন সক্রিয় রাখে। নিচে এমন তিনটি ফলের রসের কথা বলা হলো, যেগুলো শিশুদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখলে উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
১. পেয়ারার রস
পেয়ারা শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি ভরপুর পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। এর রসে থাকে—
ভিটামিন C: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে
ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁত মজবুত করে
ভিটামিন B ও ফাইবার: হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে
নিয়মিত পেয়ারার রস খেলে শিশুদের হজম ভালো থাকে, শরীর সহজে পুষ্টি শোষণ করতে পারে, যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
টিপস: বাড়িতে টাটকা পেয়ারা ব্লেন্ড করে অল্প পানি ও এক চামচ মধু মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর জুস তৈরি করুন।
২. স্ট্রবেরির রস
স্ট্রবেরি দেখতে যেমন সুন্দর, এর গুণও তেমনি অনন্য। এতে থাকে—
ভিটামিন C, আয়রন ও ক্যালসিয়াম: হাড়ের গঠন ও রক্তে অক্সিজেন সরবরাহে সহায়ক
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে
প্রোটিন: দেহের গঠন ও হাড়ের বিকাশে ভূমিকা রাখে
স্ট্রবেরির রস শিশুদের হাড় মজবুত করে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। নিয়মিত খেলে বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলতে থাকে।
টিপস: মৌসুমি টাটকা স্ট্রবেরি দিয়ে রস তৈরি করুন; চাইলে অল্প দুধ বা কলা মিশিয়ে দিতে পারেন।
৩. কলার শেক
কলাকে শিশুদের জন্য আদর্শ ফল বলা হয়। এতে থাকে—
পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম: হাড় ও পেশি মজবুত করে
ভিটামিন B6 ও ফাইবার: হজম ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক
প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম: দেহের বৃদ্ধি ও গঠনে সহায়ক
প্রতিদিন এক গ্লাস কলার শেক শিশুদের শক্তি জোগায়, হজম ভালো রাখে এবং উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
টিপস: দুধ, পাকা কলা, সামান্য মধু ও অল্প বাদাম ব্লেন্ড করে তৈরি করুন মজাদার ও পুষ্টিকর কলার শেক।
অতিরিক্ত পরামর্শ
শুধু ফলের রস খাওয়ালেই উচ্চতা বাড়বে না—এর সঙ্গে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। যেমন:
পর্যাপ্ত ঘুম: দিনে অন্তত ৮–১০ ঘণ্টা
নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা: যেমন দড়ি লাফ, সাঁতার, বাস্কেটবল
পর্যাপ্ত পানি পান: শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়ক
পুষ্টিকর খাবার: প্রোটিন, দুধ ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখা
উচ্চতা বৃদ্ধি একটি ধীর ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তাই সন্তানকে জোর করে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা না করে ফলের রস ও স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
এই তিনটি ফলের রস নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে সন্তানের শক্তি, হজম ও বৃদ্ধি—সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে।
তবে যদি সন্তানের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম মনে হয়, তাহলে অবশ্যই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এর পেছনে জিনগত বা হরমোনজনিত কারণ থাকতে পারে।
বিডি/এএন