ফ্যাসিবাদমুক্ত জনকণ্ঠ: স্বাধীন চিন্তার নবযাত্রা

Published : ১৫:২৭, ৩ আগস্ট ২০২৫
দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, মতাদর্শিক সংকীর্ণতা এবং একমুখী সম্পাদকীয় অবস্থানের অভিযোগে বিতর্কিত থাকা দেশের অন্যতম পুরনো দৈনিক ‘জনকণ্ঠ’-এ শুরু হয়েছে এক নতুন যুগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে, পত্রিকাটিকে অবশেষে ফ্যাসিবাদী নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব থেকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ, গণমুখী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিতে পরিচালিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তনকে গণমাধ্যম বিশ্লেষকরা দেখছেন জনকণ্ঠের আত্মশুদ্ধি ও পুনর্জন্ম হিসেবে। অনেকেই বলছেন, যে দৈনিক একসময় ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা এবং একক রাজনৈতিক ধারার প্রচারে যুক্ত ছিল বলে সমালোচিত হতো, তা আজ গণমানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে চাইছে। নতুন নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি পত্রিকাটির নতুন সম্পাদনা পর্ষদ ও নীতিমালায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে—
বহুমতের প্রতি সম্মানতথ্যনির্ভর সাংবাদিকতাজনগণের অধিকার, স্বার্থ ও সংবিধান রক্ষায় ভূমিকাপ্রকৃত সাংবাদিকতার আদর্শে ফিরে যাওয়া জনকণ্ঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, "আমরা চাই, পাঠক যেন আর আমাদের দেখে কোনো আদর্শের যন্ত্র হিসেবে নয়, বরং একটি স্বাধীন ও বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে। সাংবাদিকতা হবে সত্যের পক্ষে, কারও ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষার জন্য নয়।" পাঠক ও পেশাজীবী মহলের প্রতিক্রিয়া এই রূপান্তরের খবরে সাংবাদিক সমাজ, পাঠক ও গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একাধিক সদস্য এই উদ্যোগকে গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই উল্লেখ করেছেন।
এক প্রবীণ সাংবাদিক বলেন, "জনকণ্ঠ যদি সত্যিই নিজেদের অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়ায়, তবে এটি দেশের গণমাধ্যম জগতে একটি সাহসী ও উদাহরণযোগ্য পদক্ষেপ হবে।" পথচলার সামনে চ্যালেঞ্জ চযদিও এই রূপান্তরকে ইতিবাচক বলা হচ্ছে, তবে এটিকে বাস্তবে রূপ দিতে গেলে প্রয়োজন হবে: সাংবাদিকদের স্বাধীন কাজের পরিবেশ মালিক পক্ষের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার ফ্যাসিবাদমুক্ত’ ঘোষণা শুধু একটি বাক্য নয়—এটি জনকণ্ঠের জন্য আত্মজিজ্ঞাসা ও আত্মশুদ্ধির পথচলা। যদি এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ পায়, তবে ‘জনকণ্ঠ’ আবারও হয়ে উঠতে পারে সত্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বর, একটি গণমাধ্যম যাকে মানুষ ভরসা করতে পারবে।