ঢাকায় বাড়ছে ডিভোর্সের হার প্রতি মাসে গড়ে ৬০৯টি ডিভোর্স

ঢাকায় বাড়ছে ডিভোর্সের হার প্রতি মাসে গড়ে ৬০৯টি ডিভোর্স

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২০:১৪, ১৯ আগস্ট ২০২৫

ঢাকায় ডিভোর্সের হার প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজধানীর সামাজিক পরিবেশ ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, নারীর শিক্ষা ও আত্মনির্ভরশীলতা, পারিবারিক সহিংসতা এবং স্বাধীনতার প্রবণতা এই বৃদ্ধির পেছনের মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন।

একাধিক উদাহরণ লক্ষ্য করা গেছে। অনার্স চতুর্থবর্ষ পড়ুয়া জান্নাত (ছদ্মনাম) বাবা-মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের শুরুতে জীবন সুখী মনে হলেও, কয়েক মাসের মধ্যেই ছোটখাটো অশান্তি বড় আকার ধারণ করে। জান্নাতকে সন্তানের জন্মের পরও স্বামী ও শশুরবাড়ির পক্ষ থেকে সহানুভূতি বা সহায়তা মেলেনি। পরিবারের সমর্থনে তিনি ডিভোর্স নোটিশ পাঠান।

অন্য উদাহরণে, ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানো পারুল (ছদ্মনাম) ও হাসান (ছদ্মনাম) দাম্পত্য জীবনের তিক্ততায় ডিভোর্সে মুখোমুখি হন। পারুল ছিলেন স্কুল শিক্ষক, আর হাসান ব্যবসায়ী। পারস্পরিক মতপার্থক্য ও গায়ে হাত তোলার ঘটনা তাদের সংসারে অবনতির সূচনা করে।

পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মোট ৪৮,৩৬৯টি ডিভোর্স নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ পাঠিয়েছেন ১২,২৯৯টি, আর নারী পাঠিয়েছেন ৩৬,০৭০টি। শুধু ২০২৪ সালেই প্রতি মাসে গড়ে ৬০৯টি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিশেষভাবে, নারীরাই পুরুষের তুলনায় বেশি ডিভোর্স নোটিশ পাঠাচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শাহ এহসান হাবীব বলেন, “সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের জীবনযাপনেও পরিবর্তন এসেছে। এখন ডিভোর্সকে কলঙ্ক হিসেবে না দেখে মান্য করা হচ্ছে। মানুষ আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজের সুখ ও সম্মানকে প্রাধান্য দিচ্ছে।”

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ইশরাত হাসান উল্লেখ করেন, “নারীরা এখন আর অর্থনৈতিকভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল নন। সংসারে নির্যাতন সহ্য করার পরিবর্তে ডিভোর্স গ্রহণ করে শান্তিপূর্ণ জীবনকে বেছে নিচ্ছেন।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডিভোর্সের হার কমানোর জন্য পারস্পরিক সমঝোতা, সমঅধিকার এবং সমমর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করলে সংসারে শান্তি ফিরে আসবে এবং দু’পক্ষই সন্তুষ্ট থাকবে।

 

Source:Dainik Amader Shomoy

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement