শেখ বশিরউদ্দীনের দাবি—পাঁচ বছরে দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন সম্ভব

Published : ১৭:৩৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশকে সোনার খনিতে রূপান্তর করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কাঁচামালের কিছু ঘাটতি রয়েছে, তবে মেধা ও জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। আল্লাহ কাউকেই জ্ঞানার্জনের একচেটিয়া অধিকার দেননি। যে যত বেশি চেষ্টা করবে, সে তত বেশি অর্জন করতে পারবে। এখানে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট নেই।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ব্যবসার ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নেরও উত্তর দেন। এ আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা গবেষণা ব্যুরো।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, শ্রম উৎপাদনশীলতা, খরচ ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক সুবিধা, আর্থিক খরচ ও ঋণপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে পারলে কাঁচামালের ঘাটতি পুষিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব।
তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহই আসল শক্তি। গত রমজানে সরকারের অর্থ বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত পদক্ষেপে সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক ছিল বলেই নিত্যপণ্যের দাম কম ছিল।
গণঅভ্যুত্থানের পর বাজার স্থিতিশীল রাখা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন কথিত সিন্ডিকেটের অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। সাপ্লাই সাইড ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও ব্যবসায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছি এটি মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া সম্ভব হতো না।
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের দেনা ছিল বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেই দেনা শোধ করা হয়েছে। বর্তমানে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারে।
ভবিষ্যৎ সরকারের প্রতি প্রত্যাশা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনে ‘ক্রোনি’ অর্থনীতি গড়ে তোলা হয়েছিল। সম্পদের বণ্টনে ছিল মারাত্মক বৈষম্য। অথচ এসব ক্রোনিরা অর্থনীতিতে কোনো ইতিবাচক অবদান রাখেনি; বরং বাজারকে অস্থির করেছিল। আগামী সরকার যদি সমন্বিত উদ্যোগে গণতান্ত্রিকভাবে বাজার পরিচালনা করে ও নিরপেক্ষ সংস্কার কার্যকর করে, তবে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তৈয়ব চৌধুরী, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম এবং সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিন চৌধুরী।
পরে শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।
BD/AN