১৯৭৩ সালে উড়োজাহাজ ছিনতাই করেছিলেন নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির স্বামী

১৯৭৩ সালে উড়োজাহাজ ছিনতাই করেছিলেন নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির স্বামী ছবি : সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:৪৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালে রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও তীব্র অস্থিরতার মধ্যেই কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের কয়েকদিন পর দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।

২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করা কার্কির নাম বুধবার জেন জি আন্দোলনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পদে চূড়ান্ত করা হয়।

দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় দৃঢ় ভূমিকার জন্য পরিচিত কার্কি পড়াশোনা করেছেন ভারতের বারাণসীর বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে পড়াশোনার সময়ই তার সঙ্গে পরিচয় হয় ভবিষ্যৎ স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদির, যিনি একসময় নেপালি কংগ্রেসের সক্রিয় যুবনেতা ছিলেন।

সুবেদি নেপালের ইতিহাসে আলোচিত এক ঘটনার নায়ক—১৯৭৩ সালের প্রথম উড়োজাহাজ ছিনতাই।

১৯৭৩ সালের বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা

১৯৭৩ সালের ১০ জুন বিরাটনগর থেকে ১৫ যাত্রী নিয়ে কাঠমান্ডুর পথে যাত্রা করা রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্সের টুইন-ইঞ্জিন বিমানটি ছিনতাই করা হয়। এটি ছিল নেপালের প্রথম বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা। এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, ওই বিমানে জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রী মালা সিনহাও ছিলেন।

রাজা মহেন্দ্রের আমলে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের অর্থ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে দুর্গা প্রসাদ সুবেদি, নগেন্দ্র ধুঙ্গেল ও বসন্ত ভট্টরাই এই ছিনতাই করেন। অভিযোগ আছে, পুরো পরিকল্পনাটি করেছিলেন পরবর্তী সময়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হওয়া গিরিজা প্রসাদ কৈরালা।

সুবেদি তার আত্মজীবনী বিমান বিদ্রোহ গ্রন্থে এই ছিনতাইয়ের বিস্তৃত বর্ণনা দিয়েছেন। বইটিতে তিনি নেপালি কংগ্রেস ও রাজতন্ত্রবিরোধী সংগ্রামের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।

কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল ছিনতাই?

১৯৭৩ সালের দ্য নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছিল, তিনজন সশস্ত্র ব্যক্তি ভারত সীমান্ত পেরিয়ে বিমানটি ছিনতাই করে এবং প্রায় ৪ লাখ ডলার নিয়ে পালিয়ে যায়। বিমানটি উড্ডয়নের পর তারা পাইলটকে বন্দুকের মুখে ফোর্বসগঞ্জে অবতরণে বাধ্য করে, যেখানে আরও কয়েকজন সহযোগী অপেক্ষা করছিলেন।

প্রতিবেদনটিতে দূতাবাসের একজন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, ছিনতাইকারীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট ছিল না, বরং এটি টাকার জন্যই সংঘটিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

অন্যদিকে রয়টার্স জানায়, ছিনতাইয়ের টাকায় যাদের অংশ ছিল, তাদের মধ্যে সুশীল কৈরালাও ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন। এই ঘটনায় তাকে তিন বছর কারাগারে কাটাতে হয়।

পরবর্তীতে বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে অক্ষত অবস্থায় পুনরায় উড্ডয়ন করে এবং অর্থ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মানি কন্ট্রোলের তথ্যানুসারে, ভারতজুড়ে লুকিয়ে থাকার এক বছরের মধ্যেই দলের অধিকাংশ সদস্য গ্রেপ্তার হন এবং জামিনে মুক্তি পান। অবশেষে ১৯৮০ সালের গণভোটের আগে তারা নেপালে ফিরে আসেন।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement