৫ আগস্টের পর বাজারে সাপ্লাই ঠিক রাখা চ্যালেঞ্জ ছিল : বাণিজ্য উপদেষ্টা

৫ আগস্টের পর বাজারে সাপ্লাই ঠিক রাখা চ্যালেঞ্জ ছিল : বাণিজ্য উপদেষ্টা ছবি : সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২০:৩৬, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, আমাদের দেশে পণ্য তৈরির কাঁচামালের অভাব রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সেই অভাব পূরণ করতে সক্ষম। আল্লাহ তায়ালা জ্ঞানার্জনে কারও ওপর কোনো মনোপলি রাখেননি; যে যত চেষ্টা করবে, সে তত অর্জন করতে পারবে। এখানে কোনো সিন্ডিকেশন নেই।

এই মন্তব্য তিনি করেছেন শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে। সম্মেলনের বিষয় ছিল ‘ব্যবসার ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়’। পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বাজারে পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখা ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, বিগত রমজানে সরকারের অর্থ বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রচেষ্টায় সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়, যার ফলে নিত্যপণ্যের দাম কম রাখা সম্ভব হয়েছিল।

৫ আগস্টের পর বাজারকে সঠিক পথে পরিচালিত করা চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তখন সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সাপ্লাই ঠিক রাখা তখন খুবই জটিল ছিল। তবে সরকারের সামগ্রিক প্রচেষ্টা এবং ব্যবসায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও জানান, শেখ হাসিনার পদকালে দেশের রিজার্ভ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ছিল। বিভিন্ন দেশের এবং প্রতিষ্ঠানের কাছে দায় ছিল ৬ বিলিয়ন। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সব দায় পরিশোধ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, লেবার প্রডাক্টিভিটি, ইউটিলিটি প্রোপরশন, লজিস্টিক এক্সিলেন্স, কস্ট টু ফিন্যান্স, অ্যাকসেস টু ফিন্যান্স এবং অ্যাকসেস টু মার্কেট নিশ্চিত করলে কাঁচামালের অভাব পূরণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘সোনার খনি’তে রূপান্তরিত করা সম্ভব।

ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সরকারের জন্য প্রত্যাশা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসকরা ক্রোনিস তৈরি করেছিলেন এবং সম্পদের বণ্টন ছিল মারাত্মকভাবে অসম। সেই ক্রোনিদের অর্থনীতি কাজে লাগেনি, বরং বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করেছে। ভবিষ্যতের সরকার যদি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাজার পরিচালনা করে এবং নিরপেক্ষ রিফর্ম চালায়, তাহলে বাজার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: তৈয়ব চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম এবং সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুসলিম চৌধুরী।

সমাপনীতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement