ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশ, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে ২৩,৪০০ কোটি ডলার পাচার

ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশ, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে ২৩,৪০০ কোটি ডলার পাচার

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২০:৫৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানের পর থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সময়ে সংঘটিত অর্থপাচার ও দুর্নীতির তথ্য ক্রমশ সামনে আসছে। এবার তার ১৫ বছরের শাসনকালের অর্থপাচার নিয়ে চাঞ্চল্যকর হিসাব প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস।

পত্রিকাটির নতুন প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী ডকুমেন্টারিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩,৪০০ কোটি ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়েছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’স মিসিং বিলিয়নস: স্টোলেন ইন প্লেইন সাইট’ শিরোনামের এই ডকুমেন্টারিতে আন্দোলনকারী, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন—এত বিপুল অর্থ কীভাবে বিদেশে চলে গেছে এবং তা আদৌ ফেরত আনা সম্ভব হবে কি না।

ডকুমেন্টারিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ মহলের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষত যুক্তরাজ্য এই পাচারের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত। লন্ডনের আর্থিক খাত ও রিয়েল এস্টেট বাজারকে টার্গেট করে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার পরিবারের নামও এই রিপোর্টে উঠে এসেছে। রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ও সাবেক মন্ত্রী হলেও, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার কারণে তদন্তের মুখে পড়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন। ডকুমেন্টারিতে বলা হয়েছে, হাসিনা ও রেহানার পরিবার বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (এসসিএ) ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের হিসাব অনুযায়ী, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১,৬০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক দখল করে শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠরা। অস্ত্রের মুখে অনেক ব্যাংক পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং ব্যাংকগুলো থেকে হাজার কোটি টাকার ভুয়া ঋণ নিজের স্বার্থে বিদেশে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয়।

সমীক্ষা ও হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক ও ব্যবসা খাত থেকে পাচার হওয়া মোট অর্থের পরিমাণ ২৩,৪০০ কোটি ডলার পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশি অর্থনীতির জন্য এক বিশাল ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement