ইউরোপে উন্নত জীবনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে মানবপাচারকারীদের প্রলোভনে পা দিয়ে লিবিয়ায় আটকে পড়া আরও ১৭৪ জন বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা লিবিয়া থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে নেমে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন, দীর্ঘদিনের কষ্টের পর প্রিয় মাতৃভূমিতে ফেরার আনন্দে অনেকে অশ্রুসজল হয়ে পড়েন।
বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা প্রত্যাবাসিতদের স্বাগত জানান এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ফিরিয়ে আনা নাগরিকদের যাত্রা ব্যয়, খাদ্যসামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানায়, লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, লিবিয়ার সরকার ও আইওএমের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের ফলে এই ১৭৪ জন অনিয়মিত অভিবাসীর নিরাপদ প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়েছে।
ফিরে আসা অনেক বাংলাদেশি জানিয়েছেন, মানবপাচারকারীদের মাধ্যমে লিবিয়ায় যাওয়ার পর তারা সেখানে অপহরণ, জিম্মি ও নির্যাতনের শিকার হন। কারও কারও পরিবারকে মুক্তিপণের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থও দিতে হয়েছে।
জনগণের সচেতনতা বাড়াতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুরোধ করেছে, লিবিয়ায় আটকেপড়া এসব নাগরিক যেন তাদের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেন, যাতে কেউ আর একই পথে না হাঁটে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, লিবিয়ার বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে এখনও কিছু বাংলাদেশি বন্দি রয়েছেন। তাদেরও নিরাপদে দেশে ফেরাতে সরকার, বাংলাদেশ দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একযোগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে সরকার ‘মানবিক উদ্যোগ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা ভবিষ্যতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।


































