হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

নাঈমুল ইসলাম খান ২০২৪ সালের ৬ জুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। তবে একই বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর তার পরিচালিত সংবাদমাধ্যমগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন তিনি।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তখনই তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বিবরণী না দেওয়ায় কমিশন মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে মোট ৩৮৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে অবশিষ্ট রয়েছে প্রায় ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

বিএফআইইউর তথ্যে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নাঈমুল ইসলাম খানের নামে থাকা ৯১টি হিসাবের মাধ্যমে ২৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা হয়, যার প্রায় সবই পরবর্তীতে তুলে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে থাকা ১৩টি হিসাবে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়।

এছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকারও বেশি। দম্পতির পরিবার মিলে মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন, যার সীমা প্রায় ২৮ লাখ টাকার বেশি।

গত ২৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করা হয়। তবে তার আগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে দুদক।