ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত হামলাকারীর দুই সহযোগীকে ভারতে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাদি হত্যা মামলার তদন্ত অগ্রগতি তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি ছিল সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত। প্রধান আসামি ফয়সালসহ আরও একজন আসামি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং খুব শিগগিরই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যেই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডে হামলার শিকার হন শহীদ শরিফ ওসমান হাদি। মতিঝিল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলে আসা প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার অজ্ঞাতপরিচয় সহযোগী চলন্ত অবস্থায় হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা ও বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে হাদির মৃত্যুর পর ২০ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজনের আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ।
