ছাত্রদল সভাপতি: জামায়াত নেতার বক্তব্য ‘নিমর্ম মশকরা’

Published : ১৫:১৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশনের (কোবা) উদ্যোগে আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে জাবেতা ইসলামী নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের অভিব্যক্ত করা এক আলোচনা সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। আমাকে অনেকে ভয় দেখায়— যদি আমরা ক্ষমতায় আসি, পাশের দেশের লোকেরা ঢুকে পড়বে। আমি বলি, আমি দোয়া করি তারা ঢুকুক। ঢুকলেই আমাদের সেই বদনাম যাবে, যা ১৯৭১ সালে মিথ্যাভাবে চাপানো হয়েছে। তখন আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার যোদ্ধা হিসেবে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ পাব। কমপক্ষে ৫০ লাখ যুবক ভারতের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধ করবে।”
এই উক্তি দ্রুতই বিতর্কের জন্ম দেয়। বক্তব্যটি শুনে অনেকেই উদ্বিগ্ন ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন; আবার অনেকে এটিকে রাজনৈতিক রসিকতা বা উসকানিমূলক মন্তব্য হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল রোববার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জামায়াত নেতার এ ধরনের বক্তব্য ‘‘বিগত সাড়ে পনের বছরের লড়াই-সংগ্রামের প্রতি নিমর্ম পরিহাস’’—কারণ, অভ্যন্তরে গত পনেরো বছর ধরে যে সংগ্রাম ও চোখরাঙানির ইতিহাস ঘটেছে, সেটিকে এভাবে ছোট করা বা ব্যঙ্গ করা গ্রহণযোগ্য নয়। রাকিব আরো বলেন, যারা ওই সময় সরকারের কাছ থেকে ভীত হয়ে সরকারি-আশ্রিত সংগঠনগুলোর সক্রিয়তাকে প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদের আজকের এ রসিকতা দেশবাসীর যন্ত্রণা অগ্রাহ্য করা বলে তিনি মনে করেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এমন ধরনের যুদ্ধাত্মক বা উসকানিমূলক বক্তব্য দেশের নীতিগত ভাবমূর্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কে যে সংবেদনশীলতা রয়েছে, সেটি বিবেচনা করলে মৃদু ও সমঝোতামূলক কূটনীতিক ভাষাই অধিক উপকারী বলে তারা মনে করেন।
জামায়াতের স্থপতি বা বক্তাদের পক্ষ থেকে এখনও এ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি; তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের ব্যাখ্যা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভবিষ্যতে এমন বক্তব্য নিয়ে আরও রাজনৈতিক আলোচনার ঝড় উঠতে পারে—এমনই আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলে করা হচ্ছে।
বিডি/এএন