হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সরকারকে প্রশ্ন তুললেন রিজভী

হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সরকারকে প্রশ্ন তুললেন রিজভী ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:৩৯, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।

এই প্রেক্ষাপটে মাসখানেক আগে চট্টগ্রাম–৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলির ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে অন্তর্বর্তী সরকারের সামগ্রিক সক্ষমতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল শুক্রবার একটি মর্মান্তিক ও মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটেছে। ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তো নিরপেক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

তাহলে তাদের শাসনামলে কীভাবে এত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে গেল, কোথা থেকে এসব অপরাধী শক্তি রাজত্ব করছে—সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই সামনে আসে। তিনি আরও বলেন, এই সময়টাতে তো সবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার কথা ছিল।

রিজভী আরও বলেন, ভয়াবহ এক বিভীষিকাময় সময় পার করে জনগণ যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, সেই সরকার কেন বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে—তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

চট্টগ্রামের ঘটনার পরও সরকার কেন আরও সতর্ক হলো না, সেটিও ভাবনার বিষয়। কেউ কি ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে—এমন সন্দেহও এখন জনমনে দেখা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

হাদির ওপর হামলার পরপরই একটি রাজনৈতিক দল বিএনপিকে লক্ষ্য করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নানা বক্তব্য ও প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় একটি কৌতূহল তৈরি হচ্ছে—সবকিছু কি কোনো মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ঘটছে কি না। বিষয়টি এখন সবাইকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলছে।

সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের মানুষের মনে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, সেটিকে সামনে রেখেই বিএনপি একটি সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার রাজনীতি করতে চায়।

তবে বাস্তবে এর বিপরীতে এক ধরনের ভিন্ন রাজনৈতিক চর্চা দেখা যাচ্ছে, যা মূলত মবোক্রেসি, প্রতিপক্ষকে হেয় করা এবং যেকোনো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলার প্রবণতাকে উৎসাহিত করছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এই ধরনের রাজনীতি আর দেখতে চায় না।

আমীর খসরু আরও বলেন, প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র তখনই কার্যকর হয়, যখন তার সুফল দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। অন্যথায় গণতন্ত্র শুধু ভাষণ আর নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement