কেয়ামতের দিন মানুষের দৃষ্টি: ডান-বাম-সামনের চিত্র

কেয়ামতের দিন মানুষের দৃষ্টি: ডান-বাম-সামনের চিত্র ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১০:৫৫, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কেয়ামত অনুষ্ঠিত হলে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। সেই দিনে সূর্য মানুষের নিকটে আসবে এবং মানুষের শরীর থেকে নির্গত ঘামের গন্ধ তাদের নাক-মুখ পর্যন্ত পৌঁছাবে। এ সময় দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করা হবে এবং বান্দাদের সকল আমল সেই মাধ্যমে মাপা হবে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, “তারা শুধু এই অপেক্ষা করছে যে কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো ইতিমধ্যেই এসেছে। অতএব কেয়ামত এসে পড়লে তারা কিভাবে উপদেশ গ্রহণ করবে?” (সূরা মুহাম্মদ: ১৮)

তিনি আরও বলেন, “যখন শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে, তখন তাদের মধ্যে আর কোন আত্মীয়তা বা সম্পর্ক থাকবে না, এবং তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতেও পারবে না। যার পাল্লা ভারী হবে, তারা সফল হবে; যার পাল্লা হালকা হবে, তারা নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।” (সূরা মুমিনূন, ১০১-১০৩)

আল্লাহ তাআলা বলেন, “প্রত্যেক মানুষের ভালমন্দ কাজের আমলনামা আমি তার গলায় ঝুলিয়ে দেব এবং কেয়ামতের দিন তার জন্য বের করবো একটি কিতাব, যাকে সে খোলা আকারে পাবে। বলা হবে, ‘পড়ো নিজের আমলনামা নিজেই। আজ নিজের হিসাব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।’” (সূরা বানী ইসরাঈল, ১৩-১৪)

নবী (সা.) বলেছেন, “কেয়ামত অবশ্যই কায়েম হবে। তা এমন সময় যে, কেউ কাপড়ের দোকানে কাপড় দেখবে কিন্তু তা গুটাতে পারবে না; কেউ দুধ দোহন করবে কিন্তু পান করতে পারবে না; কেউ হাউজ মেরামত করবে কিন্তু তা থেকে পানি পান করতে পারবে না; কেউ খাবার তুলবে কিন্তু মুখে দিতে পারবে না।” (বুখারি: ৬৫০৬)

আদী ইবন হাতিম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন প্রতিটি ব্যক্তি সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, কোন অনুবাদক বা প্রতিনিধি থাকবে না। ডানদিকে তাকালে আগের আমল ছাড়া কিছু দেখবে না, বামদিকে তাকালে আগের আমল ছাড়া কিছু দেখবে না, সামনের দিকে তাকালে জাহান্নাম দেখতে পাবে।

রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, “একটি খেজুরের সামান্য অংশ দান করেও যে ব্যক্তি নিজেকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করতে পারে, সে যেন তা করে।” (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১৮৫)

নেকীর পাল্লা ভারী করার জন্য একটি বিশেষ আমলও বর্ণিত হয়েছে। একদিন সকালে উম্মুল মুমিনিন জুয়াইরিয়া (রা.) নামাজের স্থানে অবস্থান করছিলেন। রাসুল (সা.) ফিরে এসে বলেন, “তুমি এখনো তোমার স্থানে রয়েছ!” জুয়াইরিয়া (রা.) বলেন, হ্যাঁ। তখন রাসুল (সা.) চারটি বাক্য তিনবার পাঠ করলেন। তিনি বলেন, এই বাক্যগুলোর সঙ্গে জুয়াইরিয়ার আমলও তুলনা করলে তা ভারী হবে।

উক্ত দোয়াটি হলো:

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালকিহি, ওয়ারিদা নাফসিহি, ওয়াজিনাতা আরশিহি, ওয়ামিদাদা কালিমাতিহি।

অর্থ: আমি আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি, তার সৃষ্টির সংখ্যা সমপরিমাণ, মহান সত্তার সন্তুষ্টির পরিমাণ, তার আরশের ওজন অনুযায়ী এবং বাক্যগুলোর কালির পরিমাণ পর্যন্ত। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫০৩)

এই বর্ণনাগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে কেয়ামতের দিন আমাদের সকল আমলই পরিমাপিত হবে এবং প্রতিটি নেক আমল আমাদের পাল্লা ভারী করবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement