ডিএনসিসি অভিযানে সাংবাদিক মুনজুরুল করিমের কফিশপ ভাঙচুরের অভিযোগ

Published : ০০:০০, ১৯ আগস্ট ২০২৫
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলীর অভিযানে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান তালাশ-এর সাবেক উপস্থাপক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক মুনজুরুল করিমের কফিশপ ‘ওরোমো’ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (১৮ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে গুলশান-২-এর ল্যান্ডমার্ক সেন্টারে অবস্থিত দোকানটিতে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে মুনজুরুল করিম অভিযোগ করেন, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে চলা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো অক্ষত থাকলেও নিয়ম মেনে পরিচালিত বৈধ কফিশপে আকস্মিকভাবে অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, “গুলশান-২ এ রংপুর চায়ের দোকান আর বার্গার কিং-এর গলিপথ যেন ছোটখাটো গুলিস্তান। ফুটপাত থেকে রাস্তা পর্যন্ত দখল হয়ে আছে, অথচ প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। কিন্তু নিয়ম মেনে চলা একটি কফিশপে হঠাৎ অভিযান চালানো হলো। যারা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না।”
এমন অভিযানের পেছনে ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত করে তিনি আরও লেখেন, “এ ধরনের কাণ্ডের কারণ কী হতে পারে অনুমান করতে পারেন? কারো স্বার্থ রক্ষা, নাকি কোনো বিশেষ দাবি? আমরা এর ভেতরের তথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”
যোগাযোগ করলে মুনজুরুল করিম জানান, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে তিন পার্টনার মিলে সুনামের সঙ্গে কফিশপটি চালাচ্ছেন। দোকানটি ল্যান্ডমার্ক সেন্টারের ১ নম্বর অবস্থানে এবং দোকানের পজিশনের মালিকও এই ব্যবসার অংশীদার।
তার অভিযোগ, আশপাশে অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকান থাকা সত্ত্বেও সেগুলো untouched রেখে বৈধ দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে এবং কিছু সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এটি কি কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ?”
কফিশপের অপর অংশীদার ও দোকান পজিশনের মালিক আসলাম বিশ্বাস বলেন, “দুই যুগেরও বেশি সময় আগে বৈধভাবে পজিশন কিনে ব্যবসা শুরু করি। দোকানটি অবৈধ নয়, আবার ফুটপাতেও নয়। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী পূর্ব নোটিশ ছাড়াই অভিযান চালিয়ে দোকান ভাঙচুর করেছেন।”
অন্যদিকে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী বলেন, এটি সিটি করপোরেশনের নিয়মিত উচ্ছেদ কার্যক্রমের অংশ, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান। তিনি দাবি করেন, “ফুটপাতে অবৈধভাবে মালামাল রাখা হয়েছিল এবং শেড দেওয়া হয়েছিল।”
তবে আসলাম বিশ্বাস এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “দোকানের সামনে পুরো ফুটপাত সিটি করপোরেশনের জমি নয়; অধিকাংশ অংশই মার্কেটের নিজস্ব জায়গা। সেই অংশেই মালামাল ও শেড করা হয়েছিল। আগেও এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, যা সমাধান হয়। কিন্তু এবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ করেছেন।”
সরেজমিনে দেখা যায়, আশপাশের অনেক ভবনেই স্থায়ী শেড রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি প্রতিদিন বিকেলের পর সড়ক দখল করে ব্যবসা চালালেও প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
BD/AN